আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক:: পারলো না বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারতে হলো টাইগারদের। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আফগানিস্তান বাংলাদেশকে হারিয়েছে পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে। বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্য আফগানরা সহজেই টপকে গেছে।
টাইগার বোলাররা আফগান ব্যাটারদের খুব একটা পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের দুর্দান্ত এক শতকে সহজেই জিতে হাসমতউল্লাহ শহিদীর দল। সেঞ্চুরি করা গুরবাজ ফিরে গেলেও ম্যাচ শেষ করে গেছেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
২৪৫ রানের টার্গেটে খেলতে নামা আফগানিস্তান উদ্বোধনী জুটিতে তুলে নেয় ৪১ রান। ইনিংসের অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে সাদিকুল্লাহ আটালকে ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানা। ১৮ বলে ১৪ রান করেন আফগান ওপেনার। এরপর বাংলাদেশ দ্রুত তুলে নেয় আরো দুই উইকেট।
১৪তম ওভারের শেষ বলে তিনে নামা রহমত শাহকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। তার বিদায়ে দলীয় ৬৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আফগানরা। ২২ বলে ৮ রান করেন রহমত শাহ। মুস্তাফিজের টানা দ্বিতীয় শিকারে আফগানরা হারায় তৃতীয় উইকেট। দলীয় ৮৪ রানের মাথায় বিদায় নেন অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ। ২১ বলে ৬ রান করেন তিনি।
এরপরই চুতর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন সেঞ্চুরিয়ান গুরবাজ ও হাফ সেঞ্চুরিয়ান আজমতউল্লাহ। ১১১ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন তারা। বাংলাদেশের বোলারদের পিটিয়েই এই জুটিয়েই ম্যাচ বের করে নেয়। ইনিংসের ৩৯তম ওভারের চতুর্থ বলে সেঞ্চুরি করা গুরবাজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। দলীয় ১৮৪ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় আফগানিস্তান্। ফেরার আগে দলের হাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন গুরবাজ। খেলেন ১০১ রানের দারুণ এক ইনিংস। সাত ছয় ও পাঁচ ছক্কায় সাজান ১২০ বলের সেঞ্চুরির ইনিংসটি।
সেঞ্চুরিয়ান গুরবাজের বিদায়ের পর বাংলাদেশ নিতে পারে আরো একটি উইকেট। ৪১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ১ রান করা গুলবাদিন নাইবকে ফেরান নাহিদ রানা। দলীয় ১৮৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় দলটি। এরপর ষষ্ট উইকেটে হাফ সেঞ্চুরিয়ান আজমতউল্লাহ ও মোহাম্মদ নবী ম্যাচ শেষ করে দেন। তিন চার ও পাঁচ ছক্কায় ৭৭ বলে ৭০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আজমতউল্রাহ। নবী পাঁচ চারে ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থেকে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন।
বাংলাদেশের হয়ে নাহিদ ও মুস্তাফিজ ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ সৌম্য সরকার ও তানজিদ তামিমের ব্যাটে দারুণ শুরু পায়। দুই ওপেনারের উদ্বোধনী জুটিতে টাইগাররা তুলে নেয় ৫৩ রান। ইনিংসের নবম ওভারের তৃতীয় বলে সৌম্যের বিদায়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরপরই বাংলাদেশ কিছুটা চাপে পড়ে দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে। তিন চারে ২৩ বলে ২৪ রান করা সৌম্যের বিদায়ের পরপরই সাজঘরে ফিরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। ইনিংসের দশম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৫৩ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। তিন চারে ২৯ বলে ১৯ রান করেন এই ওপেনার।
পরপর দুই ওপেনারের বিদায়ের পর বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায় তিনে নামা জাকিরের বিদায়ে। ইনিংসের ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৫৮ রানের মাথায় জাকির ফিরেন প্যাভেলিয়নে। সাত বলে করেন মাত্র ৪ রান। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলিয়ে উঠার আগেই এবার আউট হয়ে যান তাওহীদ হৃদয়। তার বিদায়ে দলীয় ৭২ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ১৪ বলে ৭ রান করেন তিনি।
পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ্। দু’জনে মিলে ১৪৫ রানের জুটি গড়েন ১৮৮ বলে। তাদের দায়িত্বশীল জুটিতেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। বিপর্যয় ঠেকিয়ে বড় সংগ্রহ করে টাইগাররা। ইনিংসের ৪৬তম ওভারের শেষ বলে মিরাজের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। দলীয় ২১৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১১৯ বলে চার চারে ৬৬ রানের ধৈর্য্যশীল এক ইনিংস খেলেন মিরাজ।
মিরাজ ফিরলেও অন্য প্রান্ত আগলে রেখে দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে ৯৮ বলে ৯৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। সাত চার ও তিন ছক্কায় ইনিংসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া নান্দনিক ইনিংসটি খেলেন তিনি। নির্ধারিত ওভার শেষে আট উইকেটে বাংলাদেশ থামে ২৪৪ রানে।
আফগানিস্তানের হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই চারটি, নবী ও রশীদ খান একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম.নিপ্র/ডেস্ক/০০