নিজস্ব প্রতিবেদক:: অসাধ্য সাধন করলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ব্যাট হাতে বুক চিতিয়ে লড়লেন। আর তাতেই বাঁচলো ম্যাচ। রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ শেষে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দল সিরিজের শেষ ম্যাচটি ‘ড্র’ করতে পেরেছে।
৪৬১ রানের বিশাল লক্ষ্য নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে মাঠে নামে বাংলাদেশ। শুন্য উইকেটে ৪৭ রান তুলে দিন শেষ করে। উইন্ডিজদের জন্য চতুর্থ দিন পুরোটাই ছিলো, বাংলাদেশের দশ উইকেট শিকার করতে পারলেই ম্যাচ জিততো ক্যারিবিয়ানরা। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের লড়াকু ব্যাটে বাংলাদেশ শুক্রবার পুরো দিনই ব্যাট করে ‘ড্র’ নিয়েই মাঠ ছাড়ে।
শেষ দিনে সকালের সেশনে বিপদ বাড়িয়ে দ্রুত ফিরেন জাকির হাসান ও মুমিনুল হক। দুই উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ ব্রেকে যায় বাংলাদেশ। দলীয় ৯৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিক ‘এ’ দল। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে সাজঘরে ফিরেন এই ওপেনার। ৯৫ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন ছয় চারে। তার বিদায়ের পর লাঞ্চ ব্রেকের আগে মুমিনুলকে হারায় বাংলাদেশ। ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১০৭ রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এক বাউন্ডারিতে ১২ বলে করেন ৫ রান।
এরপর দলীয় ১৬০ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাঁচ চার ও এক ছক্কায় ৪৯ বলে ৩৮ রান করে সাজঘরে ফিরেন অধিনায়ক সাইফ হাসান। তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি করা ইয়াসির আলীও ফিরেন সাজঘরে। তার আগে জয়কে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন তিনি। ৮৫ বলে ৬৭ রান করেন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটার। ছয় চার ও চার ছয়ে সাজান নিজের ইনিংসটি। তার বিদায়ে দলীয় ২২৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ইয়াসিরের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নামা শাহাদত হোসেন ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। ১১৪ রানের ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল হাসান জয়। ২৬৮ বলের ইনিংসে ১৪টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। ৯১ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০৬ রান তুলে ম্যাচটি ‘ড্র’ করে নেয় স্বাগতিকরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে ২৪০ রানের লিড নিয়েও বাংলাদেশকে ফলোঅন করায়নি জশুয়া ডি সিলভার দল। নিজেদের দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২২০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দলটি। তাতে তাদের লিড দাঁড়ায় ৪৬০ রান। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে ৪৬১ রান।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা উইন্ডিজরা ৫৫.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২২০ রান তুলেছে। সাত চার ও এক ছক্কায় ১৬৫ বলে ৮৩ রান করেছেন তেজনারায়ণ চন্দরপল। ৪৭ রান করেছেন অধিনায়ক জশুয়া ডি সিলভা। ২৭ রান করেন অ্যালিক স্টিভেন। ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন টেভিন।
বাংলাদেশের হয়ে সাইফ ৩টি ও নাসুম ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
বাংলাদেশ ‘এ’ দল নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে ৪৬১ রানের টার্গেটে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সাইফ হাসানদের সংগ্রহ ৬ ওভারে ২৫ রান। মাহমুদুল হাসান জয় ২৩ রানে ও জাকির হাসান ২ রানে অপরাজিত আছেন।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাজে ব্যাটিং প্রদর্শন করলো বাংলাদেশ ‘এ’ দল। জাতীয় দলের ব্যাটারদের চেয়েও বেশি রান করেছেন স্পিনার নাসুম। ইনিংস সর্বোচ্চ রান করেও অপরাজিত তিনি। অথচ তার সমান রানও তুলতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান, জাকির হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, মুমিনুল হক, সাইফ হাসানরা।
প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪৪৫ রানের বোঝা কাঁধে নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে মাত্র ২০৫ রানে। ২০৫ রানের লিড নেওয়া উইন্ডিজদের সুযোগ ছিলো বাংলাদেশকে ফলোঅনে পাঠিয়ে আবারো ব্যাটিং করানো। সফরকারী অধিনায়ক জশুয়া ডি সিলভা সে পথে হাঁটেননি। যেনো ব্যাটিং অনুশীলনে নেমে যান নিজেরা।
ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ব্যাট করেছে মাত্র ৫৪ ওভার। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন নাসুম আহমদ। ৫৮ বলের ইনিংসে এই স্পিনার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ৭টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ রান অধিনায়ক সাইফ হাসানের। ৬৮ বলের ইনিংসে ছিলো চার চার ও এক ছক্কা। পাঁচ চারে ৫৭ বলে ২৯ রান করেছেন জাকির হাসান। ৩৭ বলে ২৮ রান করেছেন নুরুল হাসান। চার চার ও এক ছক্কা ছিলো তার ইনিংসে। ৮ বলে ৫ রান করেছেন মুমিনুল। ১০ বলে ৯ রান ইয়াসির আলী রাব্বির।
উইন্ডিজের হয়ে পারমেল ৩টি, কেভিন ও ফিলিপস ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে উইন্ডিজ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৪৫ রান তুলে। ৮৩ রান করেন তেজ নারায়ণ চন্দরপল। নয় চারের সঙ্গে এক ছক্কায় ১৬০ বলে সাজান নিজের ইনিংসটি। ৮২ রান আসে অধিনায়ক জশুয়া ডি সিলভার ব্যাট থেকে। বার চার আর দুই ছক্কার মারছিলো ৯৪ বলের ইনিংসে। সাত চার ও দুই ছক্কায় ৬৬ বলে ৫৯ রান করেছেন অ্যালিসক। ছয় চার ও এক ছয়ে ৯৩ বলে ৫৬ রান করেছেন রেম্যান রেফিয়ার।
বাংলাদেশের হয়ে নাসুম ৫টি, শরিফুল ও মুশফিক ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post