নিজস্ব প্রতিবেদক:: অনভিজ্ঞ, দুর্বল জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৩৮ রান টপকাতেও বাংলাদেশকে হারাতে হয়েছে চার উইকেট। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচটি ছয় উইকেটে জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সিরিজে ২-০ ব্যবধানে লিড নিলো স্বাগতিকরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পরও সাত উইকেটে ১৩৮ রান তুলে ফেলে। জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ খর্ব শক্তির জিম্বাবুয়ের এই রান টপকাতেও হিমশিম খেয়েছে। হারিয়েছে লিটন, তামিম, শান্ত-জাকের আলীদের উইকেট। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ ও তাওহীদ হৃদয় দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন।
১৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটিতে তুলে ৪১ রান। ইনিংসের ষষ্ট ওভারের পঞ্চম বলে তানজিদ হাসান তামিমের বিদায়ে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। টাইগার ওপেনার একটি করে চার ও ছক্কায় ১৮ বলে করেন ১৯ রান। তার বিদায়ের পর তিনে নামা অধিনায়ক শান্তও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। দলীয় ৬১ রানের মাথায় দশম ওভারের তৃতীয় বলে তিনিও ফিরেন সাজঘরে। এক ছক্কায় ১৫ বলে ১৬ রান করেন টাইগাল দলনেতা।
অধিনায়কের বিদায়ের পর এক রান যোগ করতেই পরের ওভারেই প্যাভেলিয়নের পথ ধরেন ফর্ম নিয়ে আলোচনায় থাকা ওপেনার লিটন দাস। দারুণ শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ব্যাট হাতে আরো একবার ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন তিনি। দশম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৬২ রানেই তৃতীয় উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। তার বিদায়ের পর উইকেটে নামা জাকের আলী অনীকও ছোট লক্ষ্য ছুঁতে পারেননি। শত রানের আগেই বিদায় নেন তিনি। ১২ বলে ১৩ করে দলীয় ৯৩ রানে সাজঘরের পথ ধরেন অনীক।
উইকেটে থাকা তাওহীদ হৃদয় পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। তাদের দু’জনের ৪৯রানের জুটিতে ছয় উইকেট হাতে রেখে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। তিন চার ও দুই ছক্কায় ২৫ বলে ৩৭ রানে হৃদয় ও দুই চার ও এক ছক্কায় ১৬ বলে ২৬ রানে রিয়াদ অপরাজিত থাকেন।
জিম্বাবুয়ের হয়ে লুক জুঙ্গে ২টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে জোনাথন ক্যাম্পবেল ও ব্রায়ান বেনেটের ব্যাটে জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান তুলে। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ইনিংসের শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের দাপটে রান বের করতে পারছিল না জিম্বাবুয়ে। ধীর গতির ব্যাটিংয়ের পর চতুর্থ ওভারের শেষ বলে তাসকিনের এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে মারুমানি (৪ বলে ২ রান) ফিরলে ভাঙে দলটির ১৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে জয়লর্ড গাম্বিকে (৩০ বলে ১৭ রান) ফিরিয়ে উইকেট নেওয়ার তালিকায় যোগ দেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
এরপর দশম ওভারে এসে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন প্রথম তিন বলে দুটি উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের একেবারে নাগালে নিয়ে আসেন ম্যাচ। যার মধ্যে ৮ বলে ৩ রান করা সিকান্দার রাজাকে দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করেন লিটন দাস। এরপর সদ্য উইকেটে আসা ক্লাইভকে (২ বলে ০) স্লিপে ক্যাচ লুফে নিয়ে ফেরান তানজিদ তামিম। ১১তম ওভারে শেখ মেহেদীর বলে অভিজ্ঞ ক্রেইগ আরভিন (১৬ বলে ১৩) ফিরেন লিটন দাসের হাতে ক্যাচ হয়ে।
ঐ একই ওভারে মাত্র এক রানেই ফিরতে পারতেন জিম্বাবুয়ের জার্সিতে অভিষেক হওয়া জোনাথন ক্যাম্পবেল। তবে উইকেটরক্ষক জাকের আলি অনিক সহজ ক্যাচ লুফে নিতে না পারার মাশুল দিয়েছে গোটা বাংলাদেশ। ২৪ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৪৫ রানের ক্যামিও খেলে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যান। ব্রায়ান বেনেটের সাথে ৭৩ রানের ঝড়ো জুটি গড়ে দলকে ভালো এক পুঁজি এনে দেন।
১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ক্যাম্পবেলকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। শেষ দিকে ক্যাম্পবেল আউট হলেও, বেনেট অপরাজিত থাকেন। দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিয়ে ২৯ বলে ২ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন। ৩৩ রানে ২ উইকেট লাভ করেন রিশাদ। শরিফুল ২৬ রানে ১টি, শেখ মেহেদী ১৮ রানে ১টি ও সাইফুদ্দিন ৩৭ রানে ১টি উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০
Discussion about this post