নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই ক্রিকেটবিশ্বের আকর্ষণীয় লড়াই বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি তবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ক্যালেন্ডারের হিসেবে বিশ বছর পর আবার এই দু’দল ফাইনাল খেলতে নামছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল তারা। রিকি পন্টিংয়ের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে সেবার ৩৫৯ রান করে আগে ব্যাট করা অজিরা। জবাবে ২৩৪ রানে থেমে যায় ভারত। অস্ট্রেলিয়া জেতে তাদের তৃতীয় শিরোপা।
বিশ্বকাপে এবার অস্ট্রেলিয়া পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে থেকে সেমি ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। গ্রুপ পর্বে টানা দুই হারে তাদের সেমি ফাইনাল খেলার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন অনেকে। এরপর অবশ্য ধারাবাহিক পারফর্ম করেই তারা ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। এদিকে সর্বশেষ ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। ২০১৩ সালের পর আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট তারা জিততে পারেনি।
এবারের ফাইনাল নিয়ে ভারতে উন্মাদনা সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে। টুর্নামেন্টে ভারত এখনো হারেনি। লিগপর্বে ৯ ম্যাচ, সেমিফাইনালসহ মোট ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা। এদিকে ফাইনাল ম্যাচের একাদশ নিয়ে সেভাবে কিছু খোলাসা করেননি ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত। তবুও অস্ট্রেলিয়ার একাধিক বাঁ-হাতি ব্যাটারদের কথা মাথায় রেখে অভিজ্ঞ অফ-স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে কি নামিয়ে দেবেন আহমেদাবাদে? উত্তর- না হবার সম্ভাবনাই বেশি!
রোহিত ও শুভমান গিলকে দেখা যাবে ওপেনিংয়ে। তিন, চার ও পাঁচ নম্বর পজিশনেও জায়গা পাঁকা বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার ও লোকেশ রাহুলের। তিনজনই পার করছেন নিজেদের সেরা সময়। সেমিফাইনালেই কোহলি ওয়ানডে ক্রিকেটের ৫০তম সেঞ্চুরি করেছিলেন। চার নম্বরে নেমে বিশ্বকাপের শেষ চারটি ম্যাচেই বড় রান পেয়েছেন আইয়ার। সর্বশেষ দুই ম্যাচে পেয়েছেন শতকের দেখা। রাহুল পুরো বিশ্বকাপেই ভারতীয় দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। মিডল অর্ডারের ভারতের এই ভরসার নাম উইকেটের পেছনেও দারুণ সাবলীল।
ছয় নম্বরে আছেন সূর্যকুমার যাদব। হার্দিক পান্ডিয়ার চোট তাকে একাদশে জায়গা করে দেয়। যদিও বিশ্বকাপে এখনও বড় রান পাননি তিনি। তবে সুযোগ পেলে ফাইনালে আক্ষেপ মিটিয়ে নিতে চাইবেন স্ট্রাইক রোটেট করে খেলা সূর্য। এরপর যথাক্রমে দেখা যেতে পারে রবীন্দ্র জাদেজা ও কুলদীপ যাদবকে। পান্ডিয়া চোট পাওয়ার পর ভারতের একাদশে একমাত্র অলরাউন্ডার এখন জাদেজা। ব্যাট এবং বল হাতে ভাল ফর্মে রয়েছেন বাঁহাতি জাডেজা। একইসঙ্গে ফিল্ডিংয়ে তার উপস্থিতি অবশ্যই চোখে পড়বে।
কুলদীপ গত এশিয়া কাপ থেকে দলের প্রধান স্পিন ভরসা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার খেলা নিয়ে তেমন সংশয় নেই। পেস বোলারদের মধ্যে জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ অবশ্যই থাকবেন। মাত্র ৬ ম্যাচেই ২৩টি উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারি বোলার মোহাম্মদ শামি। এছাড়া পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ ১৮ এবং মোহাম্মদ সিরাজ নিয়েছেন ১৩ উইকেট। বলা যায় সেমিফাইনালের একাদশ নিয়েই মাঠে নামবে ভারত। একাদশে একমাত্র পরিবর্তনের জায়গা অশ্বিন, কিন্তু সেটি হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার একাদশে আসতে পারে পরিবর্তন। তবে ভারতের মত তাদের একাদশ পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ কম। মারনাস লাবুশেনের জায়গায় মার্কাস স্টয়নিসের কথা ভাবতে পারে। তবে ভারতের এমন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে লাবুশেনের ওপরই বেশি আস্থা রাখার কথা অজিদের। সে ক্ষেত্রে তাদের একাদশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা খুবই কম। অর্থাৎ লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথের দুজনই একাদশে থাকতে পারেন।
ফাইনালে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ- রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ।
ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য একাদশ- প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মারনাস লাবুশেন, জশ ইংলিস (উইকেটকিপার), অ্যাডাম জ্যাম্পা, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড।
Discussion about this post