স্পোর্টস ডেস্ক:: জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানেক আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায়ের পরিকল্পনা ছিলো জাতীয় দলের। মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটারকে ফেয়ারওয়েল দিতে চেয়ে ছিলেন সতীর্থ ক্রিকেটাররা। তবে শেষ পর্যন্ত তার কিছুই হয়নি। বিরোধী পক্ষের আন্দোলনের কারণে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে ঢাকায় আসতে পারেননি সাকিব।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত জানিয়েছেন, সতীর্থ ক্রিকেটারকে মাঠ থেকে আনুষ্টানিক বিদায় দিতে চেয়ে ছিলেন তারা। তবে সেটি দিতে পারেননি, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। অধিনায়কও জানিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সাকিব। তাকে বিদায় জানানোর জন্য তাদের বিপক্ষে পরিকল্পনা ছিলো।
সাকিবের বিদায় দিতে না পারা দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য করে শান্ত বলেন, ‘এসব পরিকল্পনা পেন্ডিং রয়ে যাচ্ছে। অবশ্যই পরিকল্পনা ছিলো আমাদের। বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় (সাকিব)। শুধু বাংলাদেশ বলব না। খুবই দুর্ভাগ্যজনক যেকোনো কারণেই হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রত্যেকটা খেলোয়াড় মনে করে এটা পেন্ডিং থেকেই গেলো।’
সতীর্থ ক্রিকেটারের বিদায় আনুষ্ঠানিক হওয়া উচিত ছিলো জানিয়ে শান্ত বলেন, ‘কীভাবে দেখছি আসলে…যেটা বললাম দুর্ভাগ্যজনক (সাকিবকে মিরপুরে বিদায় দিতে না পারা)। যেটা হওয়া উচিত ছিলো। আমরা সবাই জানি কেন হয়নি। এটা নিয়ে টেস্ট ম্যাচের আগের দিন কথা এগুতে চাই না।’
সাকিবকে হত্যা মামলায় আসামী করার পর ক্রিকেটাররা প্রতিবাদ জানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তুু তাকে দেশে দিতে না আসায় তারা কোনো প্রতিবাদ করেননি কেন জানতে চাইলে শান্ত বলেন, ‘এরকম কোনো কিছুই না, আমরা সবাই জানি উনি এখানে শেষ করতে পারলে খুবই ভালো হত। কিন্তু ফোকাস এখন আমাদের খেলায়। আমরা সবাই জানি কেনো উনি আসতে পারছেন। আর এখন বর্তমান যে অবস্থা, ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিলেই সবকিছুর সমাধান হয়ে যায়, চিন্তা করছি প্রতিদিন একটা করে স্ট্যাটাস দেব।’
সাকিব ছাত্র আন্দোলনে পাশে থাকতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। ব্যাখা করেন তার রাজনীতিতে আসার কারণও। এরপরই সরকারের সবুজ সঙ্কেত মেলে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া জানান, একজন ক্রিকেটারের নিরাপত্তা রাষ্ট্র দেবে। প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তাই রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে। আইন মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাকিবের দেশে আসা এবং বিদেশ যাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচকেরাও সরকার এবং বিসিবি থেকে সবুজ সঙ্কেত পান। ফলে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে সাকিবে দলে রাখেন তিনি। তার আগে নির্বাচকরা সব পক্ষ থেকেই ক্লিয়ারেন্স নেন। এক ভিডিও বার্তায় নির্বাচক হান্নান সরকার বলেন, ‘আমরা বোর্ডের সবুজ সংকেত পেয়েই সাকিবকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে নিয়েছি। অন্য সব জায়গা থেকেও আমরা ক্লিয়ারেন্স নিয়েই সাকিবকে দলভুক্ত করেছি।’
কিন্তুু এই ক্রিকেটারকে নিয়ে দল ঘোষনার পরই ঢাকায় আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। সাকিবের কুশপুত্তুলিকা দাহ করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে। আজ মিরপুরে সাকিবকে দেশের মাটিতে খেলতে না দেওয়ার দাবিতে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া কথা আছে। এমন কর্মসূচিতে সরকার চিন্তিত হয়ে পড়ে অলরাউন্ডারের নিরাপত্তা নিয়ে। দ্রুত পাল্টে যায় সরকারের মনোভাব। সাকিবকে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যেতে বলা হয়।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০