স্পোর্টস ডেস্ক:: ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে তাদেরকে হারিয়ে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন পেসাররা। বাংলাদেশের অল্প সংগ্রহকেও বড় করে তুলেছেন তারা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে কাবু করেছেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। নাহিদ রানা-তাসকিন আহমদের পেস আগুনে পুড়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বল হাতে দুর্দান্ত পাফরম্যান্স করে সিরিজ সেরা হয়েছেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমদ। সর্বোচ্চ ১১ উইকেট নিয়ে যৌথ ভাবে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের এই তারকা পেসার। অথচ চোটের কারণে পছন্দের ফরম্যাট টেস্টে নিয়মিত খেলতে পারেননি তিনি। তবে সেই চোট সারিয়ে তাসকিন ফিরেছেন নতুন রূপে, যেনো আরো দুর্দান্ত হয়ে।
পছন্দের ফরম্যাট টেস্টে সুযোগ মেলেই নিজেকে মেলে ধরেন তাসকিন। বল হাতে হয়ে উঠেন অতুলনীয়। নিংড়ে দেন নিজেকে। দুই ম্যাচের ৪ ইনিংসে নিয়েছেন ১১ উইকেট। বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে তাসকিনের চেয়ে বেশি উইকেট আর কেউ নিতে পারেননি। দুই টেস্ট বোলিং করেছেন ৬৪.১ ওভার। পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ওভার বোলিং করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের ১০১ রানের স্মরণীয় জয়ের ম্যাচেও বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন তাসকিন। নে জয়ের জন্য ২৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনে নামা কিসি কার্টিকে ফেরানোর পর মিডল অর্ডারে আউট করেছেন জাস্টিন গ্রিভসকে। গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট শিকার করে দলের জয়কে করেছেন সহজ। সিরিজসেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে তাসকিনের কণ্ঠে তাই উচ্ছ্বাস। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এটা অনেক বড় একটা অর্জন। আমরা টেস্ট সিরিজ ড্র করলাম। কারণ, ওদের কন্ডিশনে অনেক বড় বড় দলও ভোগে।’
সামনে এরকম আরো অনেক বড় অর্জন আসবে উল্লেখ করে তাসকিন আহমদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহতালা আমাকে এই পুরস্কারটি দিয়েছেন সিরিজসেরার। ইনশআল্লাহ, আরও অনেক (পুরস্কার) আসবে। আমি আমার শোল্ডার নিয়ে (কাঁধের চোট কাটিয়ে) টেস্ট ক্রিকেটে আসার জন্য অনেক চেষ্টা করছিলাম। আল্লাহর রহমতে আগের চেয়ে ভালো আছি। আশা করছি, আল্লাহ চাইলে এমন অনেক বড় অর্জন হবে সামনে।’
স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে হারিয়ে অসাধারণ এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাদেরকে হারিয়েছে টাইগাররা। টেস্ট পথচলার ২৪ বছরে বাংলাদেশ এর আগে আর কখনো প্রথম ইনিংসে এতো কম রান করে জয় পায়নি।
১৫০ টেস্টের ইতিহাসে বাংলাদেশ এর আগে সর্বনিম্ন প্রথম ইনিংসে ২২০ রান করে ম্যাচ জিতেছিলো ২০১৬ সালে। সেবার মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্বাগতিকরা প্রথম ইনিংসে ২২০ রান করেছিলো। ওই টেস্টে ইংলিশদের ১০৮ রানে হারিয়ে ছিলো বাংলাদেশ। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে টাইগাররা ম্যাচ জিতেছে ১০১ রানে।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৬৪ রান করেও লিড নিয়েছিলো। ক্যারিবিয়ানরা নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায়। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ জাকের আলী অনীকের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ২৬৮ রান তুলে। ২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮৫ রানে গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশ পায় ১০১ রানের স্মরণীয় এক জয়।
টাইগার ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য বুধবারের ভোরটা ছিলো অন্যরকম এক আনন্দের। ক্যারিবিয়ান দ্বীপে প্রথম টেস্টে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টেই তুলে নিলো অসাধারণ এক জয়। দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়। মেহেদী হাসান মিরাজ টেস্টের অধিনায়কত্বের অধ্যায়ে দ্বিতীয় টেস্টের বাজিমাত করলেন।
বল হাতে ক্যারিবিয়ানদের নাকানি চুবানি খাইয়েছেন নাহিদ রানা। চতুর্থ দিনের শেষ বেলায় বাংলাদেশকে জয়ের আনন্দে ভাসিয়েছেন তিনিই। শামার জোসেফের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিলেন একেবারে পড়ন্ত বেলায়। তাতেই এক দিন হাতে রেখে অসাধারণ এক জয় তুলে নিয়েছে মিরাজ বাহিনী।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ/ডেস্ক/০০