স্পোর্টস ডেস্কঃ এশিয়া কাপের সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজ বড় জয় পেয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। লাহোরে ৮৯ রানে জিতেছে টাইগাররা। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৩৩৪ রান করে বাংলাদেশ। রান তাড়ায় আফগানদের ইনিংস থেকে ২৪৫ রানে।
রেকর্ড রান তাড়া করে জিততে হতো আফগানিস্তানের। বাংলাদেশের করা ৩৩৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ফিরেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। এরপরই জুটি গড়েন রহমত শাহ-ইব্রাহিম জাদরান।হাসান মাহমুদের লেংথ ডেলিভারিতে এজড হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ইব্রাহিম। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণভাবে তা লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। ৭৪ বলে ১০ চার ও ১ ছয়ে ইব্রাহিম করেন ৭৫ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৮ বলে ৫২ রানের জুটি।
এরপর হাশমতুল্লাহ শহিদি দেখা পান ফিফটির। তাঁকে সঙ্গ দেওয়া নাজিবউল্লাহ জাদরানকে অবশ্য আউট করে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মিরাজ। এই অফস্পিনারের বলে বোল্ড হন জাদরান। এরপর আফগান অধিনায়ককে ফেরান শরিফুল। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আউটসাইড-এজড হয়ে ডিপ থার্ডম্যানে ধড়া পড়েন শহিদি ৬০ বলে ৫১ রানে থামেন তিনি। ৫৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন এই বাঁহাতি।
এরপর ১৩ রান করা গুলবাদিন নাইবকেও বোল্ড করেন শরিফুল। এরপর রশিদ খান ২০ রান করলেও আর কেউ দাঁড়াতে পারেন নি। আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ২৪৫ রানে। বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ৩ উইকেট শিকার করেছেন শরিফুল। উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ ও মেহেদি হাসান মিরাজও (১)। তবে এদিন উইকেট শূন্য থাকতে হয় সাকিবকে।
এর আগে মিরাজ ও শান্তর রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরির ম্যাচে পাহাড়সম পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ১১৯ বলে সর্বোচ্চ ১১২ রান আসে মিরাজের ব্যাটে। শান্ত ১০৫ বলে করেন ১০৪ রান। সাকিব মাত্র ১৮ বলে অপরাজিত থাকেন ৩২ রানে। মুশফিক ১৫ বলে করে যান ২৫ রান। আফগানদের হয়ে একটি করে উইকেটের দেখা পেয়েছেন গুলবাদিন নাইব ও মুজিব উর রহমান।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার মিরাজ এবং নাঈম শেখ শুরু থেকেই আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছেন। তাতে ৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫০ রান। ৭ ম্যাচ পর ওপেনিং জুটিতে ৫০ দেখে টাইগাররা। দশম ওভারে বাংলাদেশ শিবিরে প্রথম আঘাতটা দেন মুজিব-উর-রহমান। ৩২ বলে ২৮ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন নাঈম শেখ। পরের ওভারে আউট হন তাওহীদ হৃদয়। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে দারুণ এক জুটি (১৯২ রানের) গড়েন মিরাজ-শান্ত। ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। অন্যদিকে শান্ত হাফ সেঞ্চুরি করেন ৫৭ বলে। ১১৫ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। অবশ্য সেঞ্চুরির পর ক্র্যাম্পের কারণে ১১২ রানে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এর ফলে শান্ত-মিরাজের জুটি থামে ১৯২ রানে। এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে নিজের সেঞ্চুরি পূরণ করেন শান্ত। তাতে দারুণ এক রেকর্ড হয়। পঞ্চমবারের মতো একই ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেন বাংলাদেশের দুজন ব্যাটসম্যান, সর্বশেষ ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস।
সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে শান্তর খেলতে হয়েছে ১০১ বল। ১০৪ রানে রান আউট হয়ে তাঁর ইনিংসে সমাপ্তি হয়েছে।তাঁর ইনিংস জুড়ে ছিল ২টি ছক্কা ও ৯টি চারের মার। ২৫ রান করে রান আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিমও। ১৫ বলে ১টি করে ছক্কা-চারে ঝড়ো ইনিংস খেলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। শামীম পাটোয়ারিও রান আউট হয়েছেন ৬ বলে ১১ রান করে। সাকিব শেষ পর্যন্ত ৩২ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করেন। ১৮ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় এই ইনিংস সাজান তিনি।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post