স্পোর্টস ডেস্ক:: বিশ্ব ক্রিকেটে টি-২০ ক্রিকেট মানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়ান ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা। টি-২০ ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা বলা হয় তাদের। হার্ডহিটারদের দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। রেকর্ড গড়েই তাদের মাটিতে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ, করলো বাংলাওয়াশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এর আগে কখনো টি-২০ সিরিজ জিতেনি বাংলাদেশ। এবার প্রথমবার সিরিজ জয়ের পাশাপাশি প্রথমবার তাদের মাটিতে তাদেরকে হোয়াইটওয়াশ করার ‘রেকর্ড’ গড়লো টাইগাররা। তিন বা তার বেশি ম্যাচের সিরিজে বিদেশের মাটিতে এটি বাংলাদেশের কোনো প্রতিপক্ষকে দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করার রেকর্ড।
বাংলাদেশ দল এর আগে দু’বার টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে প্রতিপক্ষকে। আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই রেকর্ড আছে। তবে এবার ক্যারিবিয়ানে রভম্যান পাওয়েলদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃতীয়বার টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নিলো টাগইররা। একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-২০ সিরিজে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া টাইগাররা টি-২০ সিরিজে বদলা নিলো। সিরিজের তৃতীয় টি-২০ ম্যাচে স্বাগতিক ক্যারিবিয়ানদের ৮০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধনাে জিতলো লিটন দাসের দল।
কিংস্টনে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ জাকের আলী অনীকের ব্যাটে সাত উইকেটে ১৮৯ রান তুলেছিলো। জবাবে ব্যাট করতে নামা ক্যারিবিয়ানরা টাইগারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১০৯ রানেই অলআউট হয়ে গেছে।
টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও লিটন দাস উদ্বোধনী জুটিতে তুলেন ৪৪ রান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে লিটনের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। টাইগার অধিনায়ক তিন চারে ১৩ বলে ১৪ রান করেন।
এরপর দ্রুতই উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। ষষ্ট ওভারের শেষ বলে ইমনও ফিরেন প্যাভেলিয়নে। চারটি চার ও দু’টি ছক্কায় ২১ বলে ৩৯ রান করেন এই ওপেনার। দলীয় ৫৪ রানে তার বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় সফরকারীরা। ১০ রান তুলতেই ফিরেন তিনে নামা তানজীদ তামিম। দলীয় ৬৫ রানে ইনিংসের অষ্টম ওভারে ব্যক্তিগত ৯ রানে ফিরেন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে মেহদী হাসান মিরাজকে নিয়ে জাকের আলী অনীক গড়েন ৩৭রানের জুটি। ১৩তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১০২ রানে মিরাজ ফিরেন সাজঘরে। তার আগে তিন চারে ২৩ বলে ২৯ রান করেন তিনি। এরপর রানআউটে কাটা পড়ে পরপর ফিরে যান শামীম হোসেন ও মেহদী হাসান। ১৫তম ওভারে এক সঙ্গে দু’জনেই ফিরেন। শামীম ২ রান করেন। মেহদী কোনো বলই খেলার সুযোগ পাননি।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়া বাংলাদেশের হয়ে এবার হাল ধরেন জাকের ও তানজীম সাকিব। সপ্তম উইকেটে ৫০ রান তুলে নেন তারা। এক চার ও এক ছক্কায় ১২ বলে ১৭ রানে তানজীম সাকিব দলীয় ১৬৪ রানে ইনিংসের ১৯তম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফেরেন।
অষ্টম উইকেটে জাকের আলী শেষ ওভারে রিশাদকে নিয়ে ২৫ রান তুলেন। ৪১ বলে তিনটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ৭২ রানের দারুণ এক টর্নেডো ইনিংস খেলেন। ব্যাটিংয়ে নামলেও কোনো বলই খেলার সুযোগ পাননি রিশাদ। শেষ ওভার একাই ব্যাট করেন অনীক। বাংলাদেশ থামে সাত উইকেটে ১৮৯ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে রোমারিও শেফার্ড দু’টি উইকেট লাভ করেন।
১৯০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শুরু থেকেই চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। শুন্য রানে প্রথম উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজত দলীয় ৪৬ রানেই হারিয়ে ফেলে পাঁচ উইকেট। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া দলটি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে শুন্য রানে ওপেনার ব্রেন্ডন কিংকে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেন তাসকিন্
পরের ওভারের তৃতীয় বলেই দলীয় সাত রানের মাথায় জাস্টিনকে সাজঘরে পাঠান শেখ মেহদী হাসান। ষষ্ট ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ৪৫ রানে নিকোলাস পুরানকে হারায় স্বাগতিকরা। মেহদী হাসানের শিকারের আগে পুরান ১০ বলে ১৫ রান করেন। এক রান যোগ করতেই পরের ওভারের তৃতীয় বলে, অর্থাৎ ইনিংসের সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে রোস্টন চেজকে প্যাভেলিয়নে ফেরত পাঠান হাসান মাহমুদ। রানের খাতা খুলতে পারেননি এই ব্যাটার।
একই ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার জনসন চার্লস রানআউটের শিকারে সাজঘরে ফিরলে ৪৬ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এই ওপেনার চার চারে ১৮ বলে ২৩ রান করেন। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। ব্যাট হাতে কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা করেন রোমারিও শেইফার্ড। তিন ছক্কা ও এক চারে ২৭ বলে ৩৩ রানে নবম উইকেটে তিনি প্যাভেলিয়নে ফিরলে ক্যারিবিয়ানদের সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। ১৬.৪ ওভারে ১০৯ রানেই গুটিয়ে যায় দলটি।
বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ তিনটি, তাসকিন ও মেহদী হাসান দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০