স্পোর্টস ডেস্কঃ চলতি বিশ্বকাপে আরেকটি অঘটনের জন্ম দিলো নেদারল্যান্ডস। উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে আজ মাটিতে নামাল ডাচরা। মঙ্গলবার প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে তারা। ধর্মশালায় বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে নির্ধারিত ৪৩ ওভারে ২৪৫ রান করে বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা দলটি।
রান তাড়ায় ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আসরে অপরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস গুঁটিয়ে গেছে ২০৭ রানে। নেদারল্যান্ডস ম্যাচ জিতেছে ৩৮ রানে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০২ রানে জেতে টেম্বা বাভুমার দল। পরের ম্যাচেও শতরানের জয় পায় তারা। সাবেক রেকর্ড বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেয় ১৩৪ রানে। সেই দলকে আজ নাকানিচুবানি খাইয়েছে নেদারল্যান্ডস।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আট ওয়ানডেতে এই প্রথম জয়ের স্বাদ পেল নেদারল্যান্ডস। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল তারা। ওয়ানডের বিশ্ব মঞ্চে ২৩ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের তৃতীয় জয় এটি। এর আগে ২০০৩ আসরে নামিবিয়া ও ২০০৭ আসরে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল তারা।
রান তাড়ায় নেমে দুই ওপেনার টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক মিলে ৭.৫ ওভারের মধ্যে দলকে এনে দেন ৩৬ রান। অষ্টম ওভারের শেষ বলে কলিন অ্যাকারম্যানের বলে কট বিহাইন্ড হন ডি কক। আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ানের ইনিংস থামে ২২ বলে ২০ রানে। এরপর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে প্রোটিয়ারা।
বাভুমা সাজঘরের পথ ধরেন এক ওভার পর। ফন ডার মারউইর বলে বোল্ড হয়ে ৩১ বলে ১৬ রানে থামে তার ইনিংস। দলীয় ৪২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার পল ফন মিকেরেনের শিকার হন এইডেন মারক্রাম। ৩ বলে মাত্র ১ রান করে বোল্ড হন তিনি। দলের খাতায় আর ২ রান যোগ হতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রসি ফন ডার ডুসেন। তাকে সাজঘরের পথ দেখান মারউই। তাতে ৮ রানের ব্যবধানে শুরুর ৪ উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা।
পঞ্চম উইকেটে হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার মিলে হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ডাচদের বোলিং তোপে তাদের জুটি ৪৫ রানের বেশি স্থায়ী হয়নি। জুটি ভাঙে দলীয় ৮৯ রানে। ২৮ বলে ২৮ রান করে লগান ফন বিকের শিকার হন ক্লাসেন। এরপর ক্রিজে এসে মিলারকে সঙ্গ দিতে পারেননি মার্কো ইয়ানসেন। ২৫ বলে ৯ রান করে ফন মিকেরেনের বলে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ১৪৫ রানে সাজঘরের পথ ধরেন মিলারও। ৫২ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ রান করে ফন বিকের সুইং মিস করে বোল্ড হন তিনি। তখনো জয়ের জন্য ১২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১০১ রান।
শেষদিকে জেরাল্ড কোয়েতজি ও কেশভ মহারাজ লড়াই চালিয়েও ব্যর্থ হন। ২৩ বলে ২২ রান করে আউট হন কোয়েতজি। মহারাজ অবশ্য ইনিংসের শেষ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে ছিলেন। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে ৩৭ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে কট বিহাইন্ড হন তিনি। তার ইনিংসে কেবল হারের ব্যবধানটাই কমেছে। বল হাতে এদিন দুর্দান্ত ছিলেন ৬ ডাচ বোলারই। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন লকান ফন বিক। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন পল ফন মিকেরেন, ফন ডার মারউই ও বাস ডি লিডি। ১ উইকেট নিয়েছেন কলিন অ্যাকারম্যান। উইকেট না পেলেও ৫ ওভার বল করে ১ মেডেনে মাত্র ১৯ রান খরচ করেছেন আরিয়ান দত্ত।
এর আগে বৃষ্টির হানায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে ৪৩ ওভারে নেমে আসে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা নেদারল্যান্ডস ৮২ রানে ৫ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২৪৫ রান তোলে। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের হার না মানা ইনিংস এবং শেষ দিকে ভ্যান ডার মারউই ও আরিয়ান দত্তের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এই সংগ্রহ পায় তারা। ৬৯ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৭৮ রানে অপরাজিত থাকেন স্কট। শেষদিকে ডার মারউইর ১৯ বলে ২৯ ও আরিয়ান দত্তের ৯ বলে ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে লড়াকু পুঁজি পায় ডাচরা। প্রোটিয়াদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন মার্কো ইয়ানসেন, লুঙ্গি এনগিদি এবং কাগিসো রাবাদা। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন জেরাল্ড কোয়েতজি এবং কেশভ মহারাজ।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post