কাইয়ুম আল রনি, ইডেন গার্ডেন্স, কলকাতা থেকে:: দেশীয় কমলার স্বাদ কেমন সেটা সবারই জানা। টক থাকে কম, মিষ্টি থাকে একটু। টানা হারে অস্বস্তিকর ড্রেসিংরুম নিয়ে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ এবার সেই কমলার স্বাদ নেওয়ার অপেক্ষায়। শনিবার কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ইডেন গার্ডেন্সে সেই কমলার স্বাদ কেমন হবে? সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
টানা হারে বিপর্যস্ত দল, আত্মবিশ্বাস তলানিতে। সেমিফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে ভারতে আসা সাকিবরা এখন কোনো মতে মান বাঁচাতে চান। এমনিতেই দলের স্বাস্থ্য সুখকর নয়, আফগানিস্তানের কাছে জয়ের পর একে একে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও সাউথ আফ্রিকার কাছে যে ভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে মোটেই সুখকর থাকারও কথা নয় দল। তার ওপর ঢাকায় অধিনায়ক সাকিবের সঙ্গে যা হলো তাতে অধিনায়কের মনমানষিকতা খ্যাপাটে হওয়াই স্বাভাবিক।
যে সাকিব বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্র্যান্ড, বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বিশ্বে, সেই তাকেই ভুয়া ভুয়া স্লোগান শুনতে হয়েছে হোম অব ক্রিকেটে। আরেক দিন ঢাকায় থেকে নিজেকে ফুরফুরে করে নেওয়ার কথা ছিলাে টাইগার অধিনায়কের, শুক্রবার ঢাকায় অনুশীলন সেরে বিকেলে কলকাতার ফেরার কথা ছিলো তার। সেখানে এমন ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরেছেন তিনি। টানা হার আর এসব ঘটনায় নিশ্চিত ভাবেই মানষিক ভাবে কিছুটা হলেও পিছিয়ে আছে টাইগাররা। কমলা রঙের নেদারল্যান্ডস যদি সেই সুযােগ নিয়ে নেয়, তবে টাইগারদের জন্য কমলার তেতো স্বাদই অপেক্ষা করছে।
বিশ্বকাপে রানের বন্যায় ভাসা সাউথ আফ্রিকাকে ডাচরা যে ভাবে হারিয়েছে, তাতে সাকিবের দলের অস্বস্তি কিছুটা বেড়ে যাওয়ার কথা। প্রায় প্রতি ম্যাচেই সাড়ে তিনশো থেকে চার’শ রান করা প্রোটিয়াদের ডাচরা ২৪৫ রান করে ২০৭ রানেই আটকে দিয়েছে। রানের সুনামি তোলা টেম্বা বাভুমার দল ডাচদের ২৪৫ রানও টপকাতে পারেনি। বাংলাদেশের অস্বস্তির জন্য কিছুটা আতঙ্কেরই।
ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত দু’টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ফরম্যাটে সে হিসেবে প্রতিপক্ষ কিছুটা অচেনাই। যদিও কমলা টাইগাদের খুবই পছন্দের। খাদ্য তালিকায় উপরের দিকেই তাকে পুষ্টিকর এই খাবার। অসুখকর থাকা টিম বাংলাদেশ এবার কমলার তেতো স্বাদে তীক্ত না হলেই হয়।
ভারত বর্ষ তথা এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো এই দৃষ্টিনন্দন ভেন্যুতে বাংলাদেশ দল প্রায় তিন দশক আগে খেলেছিলো একমাত্র ওয়ানডে। ১৮৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ভেন্যুতে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ খেলতে নামছে দ্বিতীয় ওয়ানডে। ৬৭ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার ইডেনে এবারের বিশ্বকাপে এটিই প্রথম ম্যাচ। বিশ্বকাপে কলকাতার প্রথম ম্যাচ হোক বাংলাদেশের নতুন করে শুরুর মঞ্চ। ঘুরের দাঁড়ানোর মঞ্চ। ক্রিকেট পাগল বাঙালীরাও চান বাঘের গর্জন। ওপার বাংলার বাঘ এবার বাংলায় গর্জে উঠুক আরো একবার। পিঠে যে ঠেকে গেছে দেওয়ালে।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০
Discussion about this post