নিজস্ব প্রতিবেদক:: জাকের-হৃদয়ের লড়াই বৃথা গেলো। বার বার মাটিতে পড়ে গিয়েও হৃদয় লড়াই করে ছিলেন। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে এনে দিয়ে ছিলেন লড়াইয়ের পূঁজি। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর কাজে লাগেনি। শুবমান গিলের সেঞ্চুরিতে ভারত ছয় উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রোহিত শর্মার দল তুলে নিয়েছে জয়।
দুবাইয়ে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ শুরুর বিপর্যয় এড়িয়ে ২২৮ রান তুলেছিলো। ২২৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ভারত চার উইকেট হারিয়ে গিলের শতকে জয় নিশ্চিত করে ফেলে।
২২৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ভারতকে খুব একটা পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। অধিনায়ক রোহিত আর সেঞ্চুরিয়ান গিলের ৬৯ রানের জুটিতেই ভারত পায় দারুণ শুরু। প্রথম উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রথম পাওয়ার প্লের শেষ ওভার পর্যন্ত। দশম ওভারের পঞ্চম বলে রোহিতকে ফিরিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পান তাসকিন। ভারতীয় অধিনায়ক সাত চারে ৩৬ বলে ৪১ রান করেন।
তিনে নামা বিরাট কোহলিকে নিয়ে গিল দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৪৩ রানের জুটি। ইনিংসের ২৩তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১১২ রানে বিরাটকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন রিশাদ। এক বাউন্ডারিতে ৩৮ বলে ২২ রান করেন কোহলি। তার বিদায়ের পর দ্রুত আরো দুই উইকেট হারায় ভারতীয় দল। ইনিংসের ২৮তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৩৩ রানে শ্রেয়ার্স আয়ার সাজঘরে ফিরলে তৃতীয় উইকেট হারায় রোহিতের দল। দুই বাউন্ডারিতে ১৭ বলে ১৫ রান করা শ্রেয়ার্সকে ফেরান মুস্তাফিজ।
তৃতীয় উইকেটের পর দ্রুত চতুর্থ উইকেটও হারায় ভারত। ১০ রান যোগ করতেই দলীয় ১৪৪ রানে ইনিংসের ৩১তম ওভারের প্রথম বলে রিশাদের দ্বিতীয় শিকারে অক্ষর প্যাটেল প্যাভেলিয়নের পথ ধরেন। ১২ বলে ৮ রান করেন তিনি।
পঞ্চম উইকেটে খেলা শেষ করে দেন গিল ও রাহুল। দু’জনের ৮৭ রানের জুটিতে ভারত জিতে যায় ছয় উইকেটে। সেঞ্চুরিয়ান গিল ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন। ১২৯ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন নয় চার ও দুই ছক্কায়। ৪৭ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকা রাহুল এক চারের সঙ্গে হাঁকিয়েছেন দুই বাউন্ডারি।
বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ দু’টি, মুস্তাফিজ ও তাসকিন একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ অলআউট হয় ২২৮ রানে। তাওহীদ হৃদয়ের সেঞ্চুরি আর জাকের আলী অনীকের হাফ সেঞ্চুরিতে ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ের পূঁজি পপায় বাংলাদেশ দল।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মহা বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। দলীয় ১ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশ টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় দলীয় ৩৫ রানেই হারায় পাঁচ উইকেট। ষষ্ট উইকেটে তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে ১৫৪ রানের জুটি গড়ে ফিরেছেন জাকের আলী অনীক।
৩৫ রানের মধ্যেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া দলের হাল ধরেন জাকের আলী অনীক ও তাওহীদ হৃদয়। ষষ্ট উইকেট জুটিতে স্বস্তি পায় বাংলাদেশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টাইগাররা ৪২.৪ ওভারে ছয় উইকেটে ১৮৯ রান তুলেছে। ৬৮ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে প্যাভেলিয়নে ফিরেছেন অনিক।
ব্যাট করতে নামা টাইগাররা ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে হারায় ওপেনার সৌম্য সরকারকে। ৫ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। দলীয় ১ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশ পরের ওভারের চতুর্থ বলে অধিনায়ক শান্তকে হারায়। তিনে নামা টাইগার অধিনায়কও রানের খাতা খুলতে পারেননি। দুই রানে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশ ২৬ রানে হারায় তৃতীয় উইকেট। চারে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ ইনিংসের সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্যক্তিগত ৫ রানে ফিরেন সাজঘরে। তার আগে তৃতীয় উইকেটে তানজীদ তামিমের সঙ্গে গড়েন ২৪ রানের জুটি।
নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৩৫ রানে চতুর্থ উইকেটে প্যাভেলিয়নে ফেরেন ওপেনার তানজীদ হাসান তামিম। এক প্রান্ত আগলে রাখা টাইগার ওপেনার চার চারে ২৫ বলে করন ২৫ রান। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসা অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ডাক মারেন। সিনিয়র এই ক্রিকেটারের বিদায়ে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
ষষ্ট উইকেটে দলের হাল ধরেন হৃদয় ও জাকের। ১৫৪ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামলান তারা। বাংলাদেশ রাখেন ম্যাচের মধ্যেই। ইনিংসের ৪৩তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৮৯ রানে জাকেরের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। চার বাউন্ডারিতে ১১৪ বলে ৬৮ রান করেছেন জাকের।
হৃদয় ১১৪ বলে ছয় চার ও দুই ছক্কায় তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন। বিপর্যয়ে পড়া দলকে ব্যাট হাতে টেনেছেন তিনি। ষষ্ট উইকেটে জাকের আলীকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘রেকর্ড’ গড়া জুটিও গড়েছেন। মাঝে রিশাদ ১২ বলে করেছেন ১৮ রান। তার বিদায়ের পর ইনিংসের দুই বল আগে হৃদয় ১০০ রানে আউট হলে বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায় ২২৮ রানে।
ভারতের হয়ে মোহাম্মদ শামী পাঁচটি, হার্তিশ রানা তিনটি ও অক্ষর প্যাটেল দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০