স্পোর্টস ডেস্ক:: জস ইংলিশের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করা ইংলিশদের ৩৫১ রান টপকে যেতে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি অজিদের। জস ইংলিশের অপরাজিত শতক, ম্যাথু শর্ট ও অ্যালেক্স কেয়ারির হাফ সেঞ্চুরিতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে স্টিভেন স্মিথের দল।
আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়লো। বিশ্ব আসরে এর আগে আর কোনো দল সাড়ে তিনশোর বেশি রান টপকে জিততে পারেনি। লাহোরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ‘রেকর্ড’ গড়লো অস্ট্রেলিয়া।
‘রেকর্ড’ ৩৫২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া শুরুতে কিছুটা ভয় ধরিয়ে দিয়ে ছিলো সমর্থকদের মনে। দলীয় ২১ রানে, ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ওপেনার হেডকে হারায় দলটি। ৫ বলে ৬ রান করেন এই ওপেনার। তিনে নামা অধিনায়ক স্মিথ ভয় আর বাড়িয়ে দেন। ব্যক্তিগত ৫ রানে, দলীয় ২৭ রানে ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে তিনিও ফিরেন সাজঘরে।
তৃতীয় উইকেটে ম্যাথু শর্ট ও মার্নাস লাবুশেন ৯৫ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। এরপর আর পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি অজিদের। জস ইংলিশশ, লাবুশনে, কেয়ারি ও ম্যাথু শর্টের ব্যাটে সহজেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। ইনিংসের ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১২২ রানে সাজঘরে ফিরেন তৃতীয় উইকেটে, ব্যক্তিগত ৪৭ রানে। মাত্র তিন রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেছেন তিনি। ৪৫ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি হাঁকান পাঁচটি। তার বিদায়ের পর ম্যাথু শর্টও ফিরেন দ্রুত। দলীয় ১৩৬ রানে এই হাফ সেঞ্চুরিয়ান প্যাভেলিয়নের পথ ধরেন ইনিংসের ২৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে। নয় চার ও এক বাউন্ডারিতে ৬৬ বলে খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস।
পঞ্চম ইংলিশ বোলারদের তুলোধুনো করেন জস ইংলিশ ও অ্যালেক্স কেয়ারি। ১১৬ বলে তাদের ১৪৬ রানের জুটিতেই অস্ট্রেলিয়ার জয় অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ৪২তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২৮২ রানে কেয়ারির বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। ফেরার আগে কেয়ারি আট বাউন্ডারিতে ৬৩ বলে ৬৯ রান করেন। ষষ্ট উইকেটে ম্যাক্সওয়েল ও ইংলিশ ৭৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করে দেন। পাঁচে নামে জস ইংলিশ ১২০ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ৮৬ বলের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজিয়েছেন আট চার ও ছয় ছক্কায়। চার চার ও দুই ছক্কায় ১৫ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাক্সওয়েল।
ইংল্যান্ডের হয়ে মার্ক উড, জোফ্রা আর্চার, আদিল রশিদ ও লিয়াম লিভিংস্টোনরা একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে ইংল্যান্ড বেন ডাকেটের ১৬৫ রানের নান্দনিক ইনিংসের সঙ্গে জো রুটের হাফ সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড ৩৫১ রান তুলে ৮ উইকেটে।লাহোরে টস হেরে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড ওপেনার ফিল সল্টকে হারিয়ে শুরু করে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৩ রানে ব্যক্তিগত ১০ রানে সাজঘরে ফিরেন এই ওপেনার। তিনে নামা জেমি স্মিথও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ষষ্ট ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৪৩ রানের মাথায় প্যাভেলিয়নের পথ ধরেন। তিন বাউন্ডারিতে ১৩ বলে ১৫ রান করেন তিনি।
দ্রুত দুই উইকেট হারানো ইংল্যান্ড তৃতীয় উইকেটে ঘুরে দাঁড়ায়। সেঞ্চুরিয়ান ডাকেট ও জো রুট মিলে গড়েন ১৫৮ রানের বড় জুটি। ৩১তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ২০১ রানের মাথায় রুটের বিদায়ে ভাঙে জুটি। চার বাউন্ডারিতে ৭৮ বলে ৬৮ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলেন রুট। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দুর্দান্ত ব্যাট চালাতে থাকেন ডাকেট। এগারো চার ও এক ছক্কায় ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি।
সেঞ্চুরির পর আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠেন বেন ডাকেট। ইনিংসের ৪৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ডাকেট যখন প্যাভেলিয়েন ফেরেন, তার নামে পাশে তখন জ্বলজ্বল করছে ১৬৫ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। এর আগে ১৯ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার ইনিংস সর্বোচ্চ ছিলো ১০২ রানে। সেঞ্চুরি ছিলো দু’টি। আজ ১৬৫ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেছেন ১৪৩ বলে। অজি বোলারদের তুলোধুনো করে ১৭ বাউন্ডারির সঙ্গে তিন ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি। জস বাটলারের ২৩ আর জোফ্রা আর্চারের অপরাজিত ২১ রানে ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে ৩৫১ রানে থামে।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বেন ডোয়ার্শিস তিনটি, অ্যাডাম জাম্পা ও মার্নাস লাবুশেনে দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০