নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে আম্পায়ারিং বিতর্কের ম্যাচে রানের জোয়ার বইয়ে দিল আবাহনী লিমিটেড। সোমবার আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৪১ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। এই ম্যাচে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ৬৯ রানে টিকে যান দলটির ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এরপর পেয়ে যান চলতি লিগের নিজের প্রথম সেঞ্চুরি।
নাঈম শেখ-এনামুল হক বিজয়ের জুটি থেকে আসে ১১০ রান। বিজয় ৪৫ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। নতুন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৮৯ রানের জুটি গড়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন নাঈম। ৯৭ বলে শতকের দেখা পান এই বাঁহাতি ওপেনার। শেষ পর্যন্ত আউট হন ১০৪ বলে ১০৫ রান করে। ১২টি চার ও ৪টি ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি নাঈমের অষ্টম সেঞ্চুরি। নাঈম ফিরলে শান্ত মাত্র ৭৭ বলে শতকের দেখা পান।
তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ঝড়ো ফিফটি। শান্ত ১১৮ রান করেন ৮৫ বলে ১৩টি চার ও ৪টি ছক্কায়। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে শান্তর এটি ১১তম সেঞ্চুরি। চলতি আসরে প্রথম। তাওহীদ অপরাজিত ছিলেন মাত্র ৩৫ বলে ৬৫ রান করে। ২ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কায় তিনি সাজান নিজের এই ইনিংস। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে দুই পেসার হাসান মাহমুদ-রেজাউর রহমান রাজা রান দেন সমান ৭৬ করে। হাসান ২ উইকেট পেলেও রাজার ঝুলিতে জমা হয় ১টি উইকেট।
আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তটি আসে আবাহনীর ইনিংসের ২২তম ওভারে। স্ট্রাইকে তখন দলটির ওপেনার নাঈম। প্রাইম ব্যাংকের পার্টটাইম স্পিনার মোহাম্মদ মিঠুনের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ব্যাটে লাগাতে পারেন নি নাঈম। বল পেছনের পায়ে লাগতেই জোরাল আবেদন। আউট দেন নি আম্পায়ার। সিদ্ধান্তে নাখোশ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের খেলোয়াড়রা এগিয়ে আসেন প্রতিবাদে। খেলা বন্ধ থাকল কিছুক্ষণ। এরপর খেলা শুরু হলে মাইলফলক স্পর্শ করেন নাঈম।
৩৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ফিরেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলটি অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে করেছিলেন তাসকিন আহমেদ। সেখানে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালিয়েছিলেন তামিম, তার ব্যাটের কানায় বল লেগে চলে যায় স্লিপে। সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেছেন নাইম শেখ। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জাকির হাসানও। দুই চারে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ১২ বলে ৮ রান করেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
১৯ রানে টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে হারানোর পর শাহাদাত হোসেন দিপুকে নিয়ে দলের হাল ধরেন পারভেজ হোসেন ইমন। তবে দিপু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। নবম ওভারে তানজিম সাকিবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১২ বলে ১২ রান। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন, অলক কাপালিরাও যোগ দিয়েছেন এই আসা-যাওয়ার মিছিলে। একমাত্র ব্যাতিক্রম ছিলেন মুশফিকুর রহিম। এই অভিজ্ঞ ব্যাটার এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন। তবে প্রয়োজনীয় রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেননি। সময় মতো গিয়ার পরিবর্তন করতে না পারলেও পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। শেষ পর্যন্ত ১০৫ বলে ১১১ রান করে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। তবে দলের হার এড়ানোর জন্য এই ইনিংস যথেষ্ট হয়নি।
চলতি লিগে টানা দশ ম্যাচ জিতল আবাহনী। সুপার লিগ শুরুর আগেই শিরোপা ধরে রাখার কাজ অনেকটা এগিয়ে রাখল টেবিলের শীর্ষে থাকা ক্লাবটি। সমান ম্যাচে ছয় জয়ে পাঁচ নম্বরে প্রাইম ব্যাংক। সবশেষ পরাজয়ে অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল তাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post