স্পোর্টস ডেস্ক:: দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে এমনিতেই ‘মহাবিপদে’ আছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এবার তিনি রীতিমতো সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছেন। যে নারী ফুটবলারদের নিয়ে বাফুফের বড় গলা, যাদের সাফল্যকে পূঁজি করে বাফুফের টিকে থাকা সেই নারী ফুটবলাররা অবসরে যাচ্ছেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে সাফ জয়ী এক নারী ফুটবলার অবসর গ্রহণ করেছেন।
শুধু নারী ফুটবলারই নয়, নারী দলের প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও তার দায়িত্ব ছাড়ছেন। কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন তিনি। যার হাত ধরেই নারী ফুটবলে এসেছে ইতিহাসের সেরা সাফল্য সেই কোচই আর কাজ করতে চাইছেন না।
হঠাৎ কি কারণে বাফুফের নারী বিভাগে এমন বেহাল অবস্থা, সেটা অবশ্য জানা যায়নি। তবে ফুটবল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে করে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়তে পারেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সাফল্য এনে দেওয় নারী দলের এমন অসন্তোষে অস্তস্তিতে আছেন তিনি।
অলিম্পিকের বাছাইয়ে মেয়েদের পাঠাতে সরকারের কাছে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা, অর্থ না পেয়ে দল না পাঠানোতে এমনিতেই বাফুফের উপল ক্ষুব্ধ ছিলো সরকার। তার ওপর ফিফা দুর্নীতির দায়ে নিষিদ্ধ করে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতির আস্থাভজন আবু নাঈম সোহাগকে। এরপরই থেকেই সরকারের নানা মহলে ফেডারেশন নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এতো সব খবরের মধ্যে নতুন করে সাফজয়ী নারী ফুটবলারের অবসর এবং কোচের পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বেকায়দায় পড়তে যাচ্ছেন ফেডারেশন সভাপতি। যাদের হাত ধরে ফুটবলে দারুণ সাফল্য আসছে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) কর্তারা খানিক স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছেন, সেই বিভাগেই এবার ভাঙন।
মাত্র ২২ বছর বয়সে নারী ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না। শুক্রবার বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ফুটবল থেকে একেবারে চিরতরে অবসরের যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়ে ফুটবল ক্যাম্প থেকে রংপুরের বাড়িতে গেছেন। তবে আর ফিরছেন না স্বপ্না।
স্বপ্না গেল বছরে সাফজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। টুর্নামেন্টে চারটি গোল করে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন হতে বিশাল অবদান রাখেন। যদিও ইনজুরির কারণে ফাইনাল খেলতে পারেননি। কিন্তু দারুণ প্রতিভাবান এই ফুটবলারকে এবার হারিয়েছে বাফুফে।
স্বপ্নার অবসরের দিনে আরও বড় এক ধাক্কা এসেছে দেশের ফুটবলে। নারী দলগুলোর কোচিং পদ ছাড়ছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। দেশের একাধিক গণমাধ্যমে নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি। খুব শীঘ্রই বাফুফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিবেন ছোটন। চলতি মাস পর্যন্তই দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর আর দেখা যাবে না তাকে।
দেশের নারী ফুটবলের জাগরণ যেভাবে হয়েছে, তার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ছোটনের। তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন তিনি দলগুলোকে। বয়সভিত্তিক ও জাতীয় নারী দলের ডাগ আউট সামলান। ২০০৬ থেকে কাজ শুরু করেন বাফুফেতে। ২০০৯ সালে প্রথম প্রধান কোচের দায়িত্ব পান। গেল বছরগুলোতে নারীদের বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দলের সব সাফল্যই তার অধীনে এসেছে। সবচেয়ে বড় সাফল্য পেয়েছেন সাফ শিরোপা দিয়ে।
তবে এবার সেই যাত্রা থেমে যাচ্ছেন। ৫৪ বছর বয়সী ছোটন স্পষ্ট করে বলেননি কেন চাকরি ছাড়ছেন। স্বপ্নাও জানায়নি কেন অবসরে গেছেন। তবে ফুটবল পাড়ায় জোর গুঞ্জন, বাফুফে থেকে যথাযথ মূল্যায়ন এবং সম্মান না পেয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে নারী ফুটবলে আরও অবসর হয়েছে। সব মিলিয়ে বাফুফে আবারও বেকায়দায় পড়তে যাচ্ছে।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post