স্পোর্টস ডেস্কঃ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কার্টিস ক্যাম্ফারের সঙ্গে মাঠেই তর্কে জড়িয়েছিলেন সিকান্দার রাজা। এক পর্যায়ে ক্যাম্পারকে ব্যাট দিয়ে মারতে গিয়েছিলেন এই রোডেশিয়ান অলরাউন্ডার। এমন কাণ্ডে শাস্তি পান তিনি।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে রাজা ব্যাট–বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। ২৮ রানে ৩ উইকেট পাওয়ার ব্যাট হাতে করেন ৬৫ রান। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছিল তাঁর হাতে। ২০২৩ সালে সেটি ছিল রাজার নবমবার ম্যাচসেরা হওয়ার ঘটনা, যা এ বছর সব সংস্করণ মিলিয়ে কোনো খেলোয়াড়ের জন্য সবচেয়ে বেশি। তবে এমন কীর্তি গড়ার সেই ম্যাচে রাজা সমালোচিত হয়েছিলেন তাঁর উদ্ধত আচরণে।
ঘটনার শুরু জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ১৪তম ওভারে। লিটল রাজাকে বারবার স্লেজিং করছিলেন। প্রথম ৪ বল পর্যন্ত রাজা চুপচাপই ছিলেন। কিন্তু পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেওয়ার পথে লিটল মাঝে এসে দাঁড়ালে রেগে যান রাজা। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় সতীর্থ লিটলের হয়ে রাজার সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিতে ছুটে আসেন ক্যাম্ফার। এতেই মেজাজ হারিয়ে ব্যাট হাতে ক্যাম্ফারের দিকে তেড়ে যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। তাকে থামাতে ছুটে আসতে হয় দুই অনফিল্ড আম্পায়ার ফরস্টার মুটিজওয়া ও আইনো চাবিকে। পরিস্থিতি সামলাতে এগিয়ে আসেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক পল স্টার্লিংও। দুই অধিনায়ক আলোচনার পর পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে আবার খেলা শুরু হয়।
এরপর শাস্তির খড়গ নেমে আসে রাজার। তারকা এই অলরাউন্ডারকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। ফলে খেলা হয় নি সিরিজের বাকি দুই ম্যাচ। যার শেষটি ছিল গত রাতে। প্রথম ম্যাচে রাজা নৈপুণ্যে জয় পেয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। এরপর রাজা না থাকায় দ্বিতীয় ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারে তারা। আর তৃতীয় ম্যাচে তো লড়াই-ই জমাতে পারল না আফ্রিকার দেশটি। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে রোববার রাতে তাদেরকে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল আয়ারল্যান্ড। দলটির জয়ের নায়ক জর্জ ডকরেল। সিরিজ সেরা হয়েছে আরেক আইরিশ ক্রিকেটার হ্যারি টেক্টর।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টসে জিতে আগে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আয়ারল্যান্ড। ব্যাট করতে শুরুতেই হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। ওপেনার তিনাশে কামুনহুকাম্বে দলীয় ৬ রানের মাথায় ২ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পরেই আউট হন অন্য ওপেনার ওয়েসলি মাদেভেরে। ১৯ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। ব্রায়ান বেনেট করেন ১৯ বলে ২৭ রান করেন। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রায়ান বার্ল খেলেন ২৮ বলে ৩৬ রানের ঝলমলে ইনিংস। আর মাদান্দে ২৭ বলে ২৭ রান করেন। ৯ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন লুক জঙ্গুয়ে। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান তুলতে সক্ষম হয় জিম্বাবুয়ে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২টি করে উইকেট শিকার করেন জশ লিটল, গ্যারেথ ডিলানি এবং ক্রেইগ ইয়াং।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খায় আয়ারল্যান্ড। শীর্ষ তিন ব্যাটারের মধ্যে ১৪ বলে ১৩ রান করা অ্যান্ড্রু বালবির্নি ছাড়া আর কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৫ রান তুলতে সক্ষম হয় আইরিশরা। ৯ বলে ৫ রান করে কার্টিস ক্যাম্ফারও আউট হলে মাত্র ৩৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় আয়ারল্যান্ড। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন হ্যারি টেক্টর এবং জর্জ ডকরেল। এই দুজনের মারমুখি ব্যাটিংয়ে ৮ বল হাতে রেখে আয়ারল্যান্ড ৬ উইকেটের জয় পায়। ফিফটি হাঁকানো টেক্টর ৪৫ বলে ৫৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন। আরেকদিকে অল্পের জন্য ফিফটি ছুঁতে না পারা ডকরেল খেলেছেন ৩২ বলে ৪৯ রানের ঝলমলে ইনিংস। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন দুজন। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১টি করে উইকেট শিকার করেন রিচার্ড নাগাভারা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্লেসিং মুজারাবানি এবং ব্রেন্ডন মাভুটা। এবার দুই দল নামবে তিন ওয়ানডের সিরিজে। আগামী ১৩ ডিসেম্বর হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম ওয়ানডে।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/১১০
Discussion about this post