স্পোর্টস ডেস্কঃ চারশ রানের রেকর্ড গড়েও জিততে পারল না নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের কাছে ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ২১ রানে হেরেছে কিউইরা। অবিশ্বাস্য ম্যাচ জিতে নিয়েছে পাক শিবির।
বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ৪০২ রানের জবাবে, ২৫.৩ ওভারে ১ উইকেটে ২০০ রান করে বৃষ্টি আইনে ম্যাচ জয় করেছে পাকিস্তান। যেখানে ৮১ বলে ১২৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন ফখর জামান। পাকিস্তানের জয়ের নায়ক তিনিই। ওই একই সময়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিল ১৭৯ রান। তাই ২৫.৩ ওভারে ১৮০ রান করলেই জিতে যেন পাক শিবির। সেই জায়গায় তাদের রান হয়েছে দুইশ।
৪০২ রানের পাহাসড়ম লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই দলীয় ৬ রানে ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিকের উইকেট হারিয়ে বসে খানিকটা ব্যাকফুটে চলে যায় পাকিস্তান। তবে এরপর থেকে উইকেটে আসা বাবর আজমকে সঙ্গে নিয়ে কিউই বোলারদের উপর চড়াও হন ফখর জামান। গড়ে তুলে অপ্রতিরোধ্য এক জুটি। এক প্রান্তে মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন ফখর।
তার সেঞ্চুরির পর ২২তম ওভারে বৃষ্টি নামে। দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টি চলার পর ম্যাচ কার্টেল ওভারে চলে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শুরু হলে জানা যায়, ৯ ওভার কাঁটা পড়েছে। ৪১ ওভারে পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪২ রান। এরপর পাকিস্তান আবারও ব্যাট করতে নামলেও, সেই জুটি আর ভাঙতে পারেনি ব্ল্যাকক্যাপসরা।
আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে রান তুলতেই থাকেন ফখর ও বাবর। এর মধ্যে ফখর ছিলেন অতি আগ্রাসী, আর বাবর তাকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন যথাযথভাবে। ২৬তম ওভারে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো বৃষ্টি হানা দেয়। সেই বৃষ্টি আর থামেনি শেষ পর্যন্ত। রানের হিসেবে পাকিস্তান এগিয়ে থাকায়, ২১ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয় দলটিকে।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করা ফখর ৮১ বলে ৮ চার ও ১১ ছক্কায় ১২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৫৫’র বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেন তিনি। অপরপ্রান্তে বাবরও ফিফটি পূরণ করেন। তিনি অপরাজিত থাকেন ৬৩ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৬৬ রান করে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে একমাত্র উইকেট শিকার করেন টিম সাউদি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪০১ রানের বিশাল পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কিউইদের এটি সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৮ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। হাসান আলির বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দিয়ে ডেভন কনওয়ে ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। ৩৯ বলে ৩৫ রান করেন কিউই ওপেনার। এরপর বড় জুটি গড়েন রাচিন রবীন্দ্র ও কেন উইলিয়ামসন।
এরপর তিনে নেমে রবীন্দ্রের সাথে জুটি বাঁধেন উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন দুজনই। তবে পেয়েছেন একজন। হতাশায় ভুগেছেন উইলিয়ামসন। ৭৯ বলে ৯৫ রান করে দলীয় ২৪৮ রানের মাথায় আউট হন কিউই অধিনায়ক। রাচিন এবং উইলিয়ামসনের জুটি থেকে আসে ১৮০ রান।
তবে উইলিয়ামসন না পারলেও ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন রবীন্দ্র। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৯৪ বলে ১০৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে দলের ২৬১ রানের মাথায় আউট হন তিনি। রবীন্দ্র এবং উইলিয়ামসন দুজনকেই হারিয়ে কিছুটা ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। তবে বাকিরা মিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার।
১৮ বলে ২৯ রান করেন ড্যারিল মিচেল। অন্যদিকে চোট কাটিয়ে একাদশে ফেরা মার্ক চ্যাপম্যান খেলেছেন ২৭ বলে ৩৯ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। দুজনের টর্নেডো ইনিংসের সুবাদে ৩০০ রানের কোটা পার করে ফেলে নিউজিল্যান্ড। শেষ দিকে ঝড় তুলেছেন গ্লেন ফিলিপস। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সুবাদে ৪০০ পেরুনো পুঁজি পায় দল।
ফিলিপস সাজঘরে ফেরার আগে খেলেন ২৫ বলে ৪১ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস। ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন মিচেল স্যান্টনার। অন্যদিকে টম ল্যাথাম খেলেন ২ বলে ২ রানের অপরাজিত ইনিংস। পাকিস্তানের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। এছাড়া ১টি করে উইকেট তোলেন হাসান আলী, ইফতিখার আহমেদ এবং হারিস রউফ।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/সা
Discussion about this post