স্পোর্টস ডেস্কঃ রোমাঞ্চকর ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারল পাকিস্তান। চেন্নাইয়ে শুক্রবার ১ উইকেটে জিতেছে প্রোটিয়ারা। এ নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে যৌথভাবে সর্বোচ্চ পঞ্চম জয় তুলে নিল প্রোটিয়ারা। সমান সংখ্যক জয় পাওয়া ভারত এখনও এই আসরে কোনো হার দেখেনি।
আগে ব্যাট করে ২৭০ রান করে পাকিস্তান। রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৩৪ রান যোগ করেন কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা। ডি কক আউট হয়েছেন ১৪ বলে ২৪ রান করে। এরপর বাভুমা ফিরে যান ২৭ বলে ২৮ রান করে। তৃতীয় উইকেটে প্রোটিয়াদের হাল ধরেন এইডেন মার্করাম ও ভ্যান ডার ডাসেন।
তারা যোগ করেন ৬৭ রান। ডাসেন আউট হয়েছেন ২১ রান করে। এরপর ক্লাসেন ১২ রান করে ফিরে গেলে কিছুতা চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের পথেই রাখেন মার্করাম। তিনি পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারকে নিয়ে যোগ করেন আরও ৭০ রান।
মিলার ৩৩ বলে ২৯ করে ফিরে যান। এরপর মার্কো জানসেন নেমে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে করেন ১৪ বলে ২০। প্রোটিয়াদের জয়ের দ্বারপ্রান্তে রেখে মার্করাম আউট হয়েছেন ৯৩ বলে ৯১ রান করে। তার ইনিংস জুড়ে ছিল ৩টি ছক্কা ও ৭টি চারের মার। মার্করাম আউট হলে পাকিস্তান কিছুটা চেপে ধরেছিল প্রোটিয়াদের।
১০ রান করা কোয়েতজিকে আউট করে জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল পাকিস্তান। তবে বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানদের সেই সুযোগ দেননি কেশভ মহারাজ ও লুঙ্গি এনগিদি। এই দুজনে প্রোটিয়াদের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। শেষ পর্যন্ত তাব্রাইজ শামসিকে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন মহারাজ।
এর আগে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ জিততে ৮০ বলে দরকার ৩৬ রান। এমন সহজ সমীকরণ থেকেও হারের শঙ্কায় পড়েছিল প্রোটিয়ারা। নাটকীয়তায় ঠাসা লড়াইয়ে শেষ জুটির নৈপুণ্যে পাকিস্তানকে হারিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচাল প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের রান ১৬ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে তারা।
৬০ রান খরচা করলেও পাকিস্তানের ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন শামসি। জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কার। আর তাতেই পাকিস্তানকে ২৭০ রানে গুটিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন এই স্পিনার। অবশ্য পাকিস্তানের দুই ওপেনারকেই ফিরিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন মার্কো ইয়ানসেন।
এর আগে দলীয় ২০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। উইকেটে থিতু হয়ে থাকার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক। ১৭ বলে ৯ রান করে সাজঘরে ফেরত যান এই ওপেনার। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মার্কো জানসেনের বলে লুঙ্গি এনগিদির হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ইনিংসের সপ্তম ওভারে জানসেনের দ্বিতীয় শিকার হন আরেক ওপেনার ইমাম উল হক। হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি করেন ১৮ বলে ১২ রান। ৩৮ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
তৃতীয় উইকেটে ৪৮ রান যোগ করেন অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। রিজওয়ান মেরে খেলছিলেন। কিন্তু ২৭ বলে ৩১ রানে থাকার সময় তার উইকেটটি তুলে নেন জেরাল্ড কোয়েতজি। ইফতিখার আহমেদও সেট হয়ে উইকেট দিয়ে আসেন। ৩১ বল খেলে তিনি করেন ২১। অধিনায়ক বাবর হাল ধরে ছিলেন। ফিফটিও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু হাফসেঞ্চুরি পূরণ হতেই উইকেট দিয়ে আসেন। প্রোটিয়াদের একাদশে ফেরা তাব্রাইজ শামসির বলে সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বাবর। ১৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে পাকিস্তান।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন সৌদ শাকিল। ষষ্ঠ উইকেটে শাদাব খানকে নিয়ে ৮৪ রান যোগ করেন এই ব্যাটার। শাদাব খান ঝোড়ো গতিতে ৩৬ বলে ৪৩ করে আউট হন। এরপর শাকিলও ফিফটি করে সাজঘরে ফিরে যান। ৫২ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৫২ রান করে তাবরেজ শামসির ঘূর্ণি বলে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে ধরা পড়েন এই হাফসেঞ্চুরিয়ান। শেষদিকে মোহাম্মদ নওয়াজ ২৪ বলে ২৪ করলেও ২৭০ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাবরের দল। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শামসি ৬০ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট। ৩টি উইকেট শিকার ইয়ানসেনের।
Discussion about this post