স্পোর্টস ডেস্ক:: আফগানিস্তানের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে বৃষ্টি। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছিলো আফগান ক্রিকেটাররা। তবে বেরসিক বৃষ্টি ম্যাচটি পরিত্যক্ত করে আফগানদের স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। আগে ব্যাট করা আফগানিস্তানের ২৭৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া ১০৯ রান তুলার পরই বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হয়ে যায়।
ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়া পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে দুই দল। তাতে এক পয়েন্ট পেয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। ম্যাচটি জিতে দুই পয়েন্ট পেলে আফগানিস্তানের সুযোগ থাকতো শেষ চারে খেলা। এ নিয়ে বৃষ্টির কারণে অস্ট্রেলিয়ার আরও একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচেও পয়েন্ট ভাগ করতে হয় অজিদের। দুই ম্যাচে পয়েন্ট হারানো অজিরা ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিয়েছে।
যদিও এখনো আফগানদের একটা সুযোগ আছে। তবে সেটা খুব একটা সম্ভব হওয়ার কথা নয়। বি-গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডকে হারালে বিদায় হয়ে যাবে আফগানদের, গ্রুপসেরা হয়ে সেমিতে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর যদি ৩০১ রান তাড়া করে কমপক্ষে ২০৭ রানে ইংলিশদের কাছে হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে স্বপ্নের সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে আফগানিস্তান।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সেদিকউল্লাহ আতাল ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে চড়ে আফগানিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে ২৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেয়। আগে ব্যাট করা আফগানরা ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে তুলেছে ২৭৩ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টির শুরুর আগ পর্যন্ত ১২.৫ ওভারে ১ উইকেটে ১০৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
ট্রাভিস হেড ও ম্যাথ শর্টের উদ্বোধনী জুটিতে অস্ট্রেলিয়া তুলে নেয় ৪৪ রান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে ম্যাথু শর্টের বিদায়ে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ১৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২০ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ট্রাভিস হেড ও স্টিভেন স্মিথ বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের আগে ৬৫ রানের জুটি গড়েন। নয় চার ও এক ছক্কায় ৪০ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন হেড। ২২ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন অজি অধিনায়ক স্মিথ।
আফগানিস্তানের হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই একমাত্র উইকেটটি পান।
সেদিকউল্লাহ আতাল ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ২৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং পূঁজি পায় আফগানরা। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহিদী।
আগে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তান প্রথম ওভারেই উইকেট হারায়। ইনিংসের পঞ্চম বলে দলীয় ৩ রানে ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ব্যক্তিগত শুন্য রানে প্যাভেলিয়নে ফেলেন। তার বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে সেদিকউল্লাহ আতাল ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইব্রাহিম জর্দান ৬৭ রানের জুটি গড়ে অজি বোলারদের দুর্দান্ত শুরু আটকে দেন। ১৪তম ওভারের তৃতীয় বলে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ৭০ রানের মাথায় ইব্রাহিম জর্দান ফিরেন প্যাভেলিয়নে। দু্ই বাউন্ডারিতে ২৮ বলে ২২ রান করেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে আফগানিস্তান বড় জুটি গড়তে পারেনি। সেদিকউল্লাহ আতালের সঙ্গে জুটি গড়ে রহমত শাহ ২১ রান যোগ করেন। ইনিংসের ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৯১ রানে রহমত শাহর বিদায়ে তৃতীয় উইকেট হারায় দলটি। ২১ বলে ১২ রান করেন রহমত শাহ। তার বিদায়ের পর চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক হাসমতউল্লা শহিদী ও সেদিকউল্লাহ আতালের জুটিতে চ্যালেঞ্জিং পূঁজি পায় আফগানরা। এই দু’জনে মিলে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬৮ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৫৯ রানে ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৫ রান করা সেদিকউল্লাহ আতালের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ছয় চার ও তিন ছক্কায় ৯৫ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান আফগান ব্যাটার।
সেদিকউল্লাহ আতালের বিদায়ের পর দায়িত্ব নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ছোট ছোট জুটি গড়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন তিনি। নিজেও করেন হাফ সেঞ্চুরি। অষ্টম উইকেটে রশীদ খানকে নিয়ে ৩৬ ও নবম উইকেটে নূর আহমদকে নিয়ে ৩৭ রানের জুটি গড়েন ওমরজাই। ইনিংসের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২৭২ রানে নবম উইকেটে সাজঘরে ফেরার আগে ৬৭ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলেন তিনি। এক চার ও পাঁচ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংসটি। ১৭ বলে ১৯ রান করেন রশিদ খান। ইনিংসের শেষ বলে আফগানিস্তান অলআউট হয় ২৭৩ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ববেন ডোয়ার্শিস তিনটি, জাম্পা ও জনসন দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০