নিজস্ব প্রতিবেদক:: কুমিল্লা জেতানোর নায়ক জনসন চার্লস। ব্যাট হাতে যেনো একাই হারিয়ে দিয়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। ৭৯ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে ফাইনাল সেরাও তিনি। অথচ শুরুতেই ভিক্টোরিয়ান্সের এই বিদেশী ফিরতেন সাজঘরে। সিলেটের পেসার রুবেল হোসেন যদি না তার ক্যাচ মিস করতেন।
ব্যক্তিগত ৮ রানেই সীমানায় ক্যাচ তুলে দেন জনসন চার্লস। সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা রুবেল হোসেন ক্যাচটি শুরুতে লুফেও নেন। তবে হাতে রাখতে পারেননি। হাত থেকে ফসকে যায়। রুবেল যেনো সিলেটের শিরোপাই হাত থেকে ফেলে দেন। আট রানে জীবন পাওয়া চার্লস ৭৯ রানে অপরাজি থেকেই মাঠ ছেড়েছেন।
ক্যাচ মিসের পর বল হাতেও খরুচে ছিলেন রুবেল হোসেন। নিজের ব্যক্তিগত শেষ ওভারে এসে অকাতরে রান বিলিয়ে দিয়েছেন। খরচ করেছেন ২৩ রান। ৪ ওভারে ৩৯ রান দিয়েছেন তিনি। সিলেটকে ফাইনালে তুলার নায়ক আরেক পেসার তানজীম সাকিবও ছিলেন খরুচে। ৪ ওভারে রান খরছের ফিফটি করেছেন তিনিও।
ক্যাচ মিস আর খরুচে বোলিংয়ে বিপিএলে প্রথমবার অংশ নিয়েই চমকে দেওয়া সিলেট স্ট্রাইকার্স পারলো না চ্যাম্পিয়ন হতে। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হারলো। বিপিএলের নবম আসরের ফাইনালে সিলেটকে সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে কুমিল্লা।
আগে ব্যাট করা সিলেট স্ট্রাইকার্স শান্ত-মুশফিকের ব্যাটে চড়ে ১৭৫ রান তুলেছিলো। জবাবে খেলতে নামা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স লিটন ও চালর্সের ব্যাটে আরো একবার জিতে নেয় শিরোপা।
পেসার রুবেল হোসেনের জন্যই আফসোসে পুড়তে হলো সিলেটকে। কুমিল্লা জেতানো চালর্সের ক্যাচ শুরুতেই মিস করে ছিলেন। সেই চার্লসইভিক্টোরিয়ান্সদের জয়ের নায়ক। ক্যাচ মিসের পর বল হাতেও খরুচে ছিলেন তিনি। নিজের শেষ ওভার গিয়ে দিয়েছে ২৩ রান। চার ওভারে ৩৯ রান দিয়েছেন তিনি। তার মতোই খরুচে ছিলেন তানজিম সাকিবও। সিলেটকে তাই হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো।
১৭৬ রানের টার্গেটে খেলতে নামা কুমিল্লার শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। ওপেনার সুনীল নারাইনকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন রুবেল হোসেন। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় চ্যাম্পিয়নরা। ৫ বলে ১০ রানে ফিরেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসা অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও দ্রুত ফিরেন। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ২৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দলটি।
ওপেনার লিটন দাস জনসন চার্লসকে নিয়ে এরপরই গড়েন প্রতিরোধের জুটি। তৃতীয় উইকেটে তারা তুলে নেন ৭০ রান। ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে লিটনের বিদায়ে ভাঙে তাদের সেই জুটি। ৫৫ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। সাত চার ও এক ছক্কায় ৩৯ বলে সাজান নিজের ইনিংসটি।
মঈন আলীকে নিয়ে চার্লস খেলা শেষ করেই মাঠ ছাড়েন। চতুর্থ উইকেটে দু’জনে তুলেন ৭২ রান। শুরুতে রুবেলের হাতে জীবন পাওয়া চার্লস ৭৯ রানের ফাইনাল সেরা এক ইনিংস খেলেন। সাত চার ও পাঁচ ছক্কার অপরাজিত থাকার ইনিংসটি ছিলো ৫২ বলে। ১৭ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থেকে তার সঙ্গী হন মঈন আলী।
সিলেটের হয়ে রুবেল ২টি ও জর্জ লিন্ডে ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা স্ট্রাইকার্সরা মুশফিক-শান্তর ব্যাটে ১৭৫ রানের পূঁজি পায় সিলেট। স্ট্রাইকার্সের শুরুটা ভাল হয়নি দলটির। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ওপেনার তাওহীদ হৃদয় শুন্য রানে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক মাশরাফী। তিনে নামলেও অধিনায়ক সফল হতে পারেননি। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৬ রানে তার বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় স্ট্রাইকার্সরা।
দ্রুত দুই উইকেট হারানো সিলেটের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তারা। দু’জনেই তুলে নেন ফিফটি। দলীয় ১০৫ রানে শান্তর বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। ইনিংসের ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মঈন আলীর বলের বোল্ড হওয়ার আগে এই ওপেনার ৬৪ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেন। নয় চার আর এক ছয়ে ৪৫ বলে সাজানো ছিলো তার ইনিংসটি।
শান্ত প্যাভেলিয়নে ফিরে গেলেও মুশফিক অবিচল থাকেন। ৭৪ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। দেড়শোর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪৮ বলে পাঁচ চার ও তিন ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান এই সিনিয়র ক্রিকেটার। দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ানের সঙ্গে রায়ান বার্লের ১৩ রানের সুবাদে স্ট্রাইকার্স ১৭৫ রান তুলে ৭ উইকেটে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে মুস্তাফিজ দু’টি, সুনিল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, তানভীর ইসলাম ও মঈন আলীরা ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/০০00
Discussion about this post