নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দারুণ জয়ে সিরিজে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ দল। ১১ বল বাকি থাকতেই শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা। সিলেটে এই জয়ের দিনে ব্যাটে-বলে পারফর্ম করেছে টাইগাররা। টপ অর্ডার পেয়েছে রান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত পেয়েছেন ঝড়ো এক ফিফটি। তার রানে ফেরায় স্বস্তি বাংলাদেশের।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে বাংলাদেশ। লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের ৬৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ উড়ন্ত শুরু পায়। যদিও মাঝে বিতর্ক হয়ে যায় সৌম্য সরকারের উইকেট নিয়ে।
নিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বল। বিনুরা ফার্নান্দোর ব্যাক অব অ্যা লেন্থ ডেলিভারিতে পুল শট খেলতে যান সৌম্য সরকার। তবে ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ ঘটাতে না পারায় বটম এজ হয়ে কট বিহাইন্ড হন সৌম্য। শ্রীলঙ্কান বোলার ও ফিল্ডারদের আবেদনে সাড়া দিয়ে অনফিল্ড আম্পায়ার গাজী সোহেল আউট দেন।
কিন্তু রিভিউ নেন সৌম্য। আর সেই রিভিউতে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত। আল্ট্রা এজে দেখা যায় স্পাইকের সময় ব্যাট-বলের মাঝে কিছুটা গ্যাপ রয়েছে। আর তাই দেখে টিভি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল নট আউটের সিদ্ধান্ত জানান। যা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হয়।
জীবন পেয়ে অবশ্য খুব বড় ইনিংস খেলতে পারেননি সৌম্য। ২২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৬ রান করে পরবর্তীতে মাথিশা পাথিরানার শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ইনিংসজুড়েই তার টাইমিং ছিল দৃষ্টিকটু। সৌম্যের বিদায়ের পর বেশি সময় টিকতে পারেননি লিটন দাসও। তবে ২৪ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩৬ রানের ক্যামিও খেলে যান তিনি।
এরপর ইনিংসের বাকি গল্প লেখেন অধিনায়ক শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। দুজনে মিলে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে একেবারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ১৮.১ ওভারেই দল লক্ষ্যে পৌঁছে। ব্যাড-প্যাচ কাটিয়ে রানে ফেরা শান্ত এদিন ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকেন ৫৩ রানে। ৩৮ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। অপরপ্রান্তে ২৫ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩.৪ ওভারে ২৮ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন মাথিশা পাথিরানা।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানের পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের শুরুতেই চাপে পড়ে দলটি। শরিফুলের করা প্রথম ওভার থেকে মেইডেন তুলে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিনের বলে আভিষ্কা ফার্নান্দো ফিরলে সেই চাপ বাড়ে আরও।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেয়নি সফরকারীরা। ২ ওভারে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৫ রান থেকে পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে ১ উইকেটে ৪৯ রান তুলে লঙ্কানরা। শেষ চার ওভারে ৪৪ রান তুলে উল্টো বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেয় অতিথিরা।
ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা কুশল মেন্ডিস ও কামিন্দু মেন্ডিসের জুটি ভেঙে ব্রেক থ্রু এনে দেন সৌম্য সরকার। নবম ওভারে ইনফর্ম কুশলকে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের তালুবন্দি করেন তিনি। ২২ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ রান করে ফিরে যান কুশল।
পরের ম্যাচেই নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে রান আউট হন আরেক সেট ব্যাটার কামিন্দু। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২৭ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রানের ক্যামিও খেলে যান। পরপর দুই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। যার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দলীয় একশ রানের আগেই লঙ্কানদের চতুর্থ উইকেট হিসেবে সাদিরা সামারাবিক্রমা ফেরায় দল।
শেখ মেহেদীর বলে আউট হওয়ার আগে ঝড় তোলার চেষ্টা করে ১৪ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৮ রানের ক্যামিও খেলে যান অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কা। এরপর সফরকারীদের ইনিংস টানেন দুই অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দাসুন শানাকা। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের রানের জুটিতে ভর করেই দেড়শ পার করা চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় লঙ্কানরা। ম্যাথিউস ২১ বলে ৪ বাউন্ডারির মারে ৩২ রানে এবং ১৮ বলে ১টি করে চার ও ছয়ের ২০ রান করে অপরাজিত দাসুন শানাকা।
উইকেট না পেলেও, বাংলাদেশের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন শরিফুল। ৪ ওভারে ১ মেইডেনসহ ২০ রান দিয়েছেন মাত্র। ১টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ, তাসকিন, সৌম্য ও মেহেদী।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post