নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিরিজ জিততে লক্ষ্য খুব একটা বড় নয়।তবুও বাংলাদেশ পারলো না। নুয়ান থিসারার বোলিং ঝড়ে সৌম্য, শান্ত, লিটন-মাহমুদউল্লাহরা যখন ব্যর্থ, ব্যাট হাতে রুখে দাঁড়ালেন বোলার রিশাদ হোসেন। একে একে সাত ছক্কা হাঁকালেন। করলেন ফিফটিও। বাংলাদেশ হারলেও রিশাদ ঝড় দেখেছেন সমর্থকেরা।
৩০ বলের ইনিংসে সাত ছক্কায় ৫৩ রান করেছেন রিশাদ হোসেন। তাতেই এক ইনিংসে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর ‘রেকর্ড’ গড়েছেন রিশাদ।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে লঙ্কান পেসার থিসারার হ্যাটট্রিকে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। যে বিপর্যয় আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি।২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারেই শেষ টি-২০ সিরিজ।
সাধারণ দর্শকে পরিপূর্ণ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারি শনিবার হতাশ হয়েছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে। প্রাপ্তি কেবল রিশাদের ঝড়ো ব্যাটিং। লেগ স্পিনার ব্যাট করতে নেমে ছিলেন সাতে। বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলেছেন। তাতেই যেনো আনন্দের শেষ নেই গ্যলারির সমর্থকদের। এদিন ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে ছিলেন আরেক বোলার তাসকিনও। এই পেসারও চার-ছক্কার মার দেখিয়েছেন। ম্যাচ শেষে স্বাগতিকরা হেরেছ ২৮ রানের ব্যবধানে। ৭ উইকেটে লঙ্কানদের ১৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ অলআউট ১৪৬ রানে।
১৭৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে টানা তিন বলে নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়েছেন এই পেসার।
ইনিংসের শুরুতেই বাংলাদেশ ওপেনার লিটন দাসকে হারায়। দলীয় ১৩ রানের মাথায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার শিকারে সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে ৭ রান করেন।
দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র দুই রান যোগ করতেই সাজঘরে ফিরেন তিনে নামা অধিনায়ক শান্ত। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১ রানে থিসারা ভেঙে দেন তার স্ট্যাম্প।শান্তর বিদায়ের পর উইকেটে আসা তাওহীদ হৃদয়ও একই পরিণতি বরণ করেন। শুন্য রানে বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসা অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এলবিডাব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন থিসারা।
পঞ্চম উইকেটে সৌম্যকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন অনীক। তবে এই ওপেনারও হতাশ করেন। থিসারার বলে বোল্ড হয়ে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ২৪ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১১ রানে ফিরেন সাজঘরে।
এরপর রিশাদ-তাসকিনরা ঝড় তুলেছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। লেগ স্পিনার রিশাদ ৩০ বলে ৫৩ রান করেছেন। সাত ছক্কায় আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়েছেন। তাসকিনও কম যাননি। ২১ বলে ৩১ রান করেছেন তিন চার ও দুই ছক্কায়। বাংলাদেশ ১৯.৪ ওভারে ১৪৬ রানেই অলআউট।
লঙ্কানদের হয়ে হ্যাটট্রিক ম্যান নুয়ান থিসারা ৫টি,ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা ২টি করে উইকেট লাভ করেছেন।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাট করতে নামা লঙ্কানরা শুরুতেই উইকেট হারায়। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৮ রানের মাথায় ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা সাজঘরে ফিরেন তাসকিনের শিকারে। মাত্র ৮ রান করেন এই ওপেনার।
তবে আরেক ওপেনার কুশল মেন্ডিস শুরু থেকেই ঝড় তুলেন।সমান ছয়টি করে বারটি চার-ছক্কার ইনিংসে তিনি ৮৬ রান করেন। ইনিংসের ১৭তম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফেরেন দলীয় ১৪০ রানে।১৫৬’র বেশি স্ট্রাইক রেটে ৫৫ বলে সাজান নিজের ইনিংসটি।
মেন্ডিস ছাড়া বলার মতো রান করতে পারেননি লঙ্কান কোনো ব্যাটার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করেছেন শেষ দিকে নামা দাসুন শানাক।দুই ছয় ও এক চারের ইনিংসে খেলেছেন নয়টি বল। এছাড়া ১৫ রান করেছেন অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা। তাতেই নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে সফরকারীরা।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ও রিশাদ ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০
Discussion about this post