নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রথম ১৫ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান ইংল্যান্ডের। সেখান থেকে শেষ পাঁচ ওভারে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। টাইগার বোলাররা একেবারে লাগাম টেনে ধরেছিল বল হাতে। বিশেষ করে হাসান মাহমুদ ছিলেন দুর্দান্ত। শেষ পাঁচ ওভারে ইংলিশরা নিতে পারে কেবল ৩০ রান, বিপরীতে হারায় ৪টি উইকেট।
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান। ব্যাট হাতে অধিনায়ক জস বাটলার ফিফটি হাঁকিয়েছেন। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৫৭ রান।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত শুরু পায় ইংল্যান্ড দল। সফরকারীরা পাওয়ার প্লে’র মধ্যে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫১ রান সংগ্রহ করে। সাগরিকায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক দুই ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্ট। দুজনই তেড়ফুড়ে খেলতে থাকেন টাইগার বোলারদের উপর। পাওয়ার প্লে’র একেবারে শেষ ওভারে প্রথম উইকেটের সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। তবে ক্যাচ মিসে সেটি আর সম্ভব হয়নি।
একেবারে শেষ ওভারে নাসুম নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসলে, প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে নেন ফিল সল্ট। তবে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন নাসুম। যদিও খানিকটা কঠিন ছিল সেটি। তবে এরপরের সুযোগ মিস একেবারে বড় দুঃশ্চিন্তার কারণ। কেননা জস বাটলারের ক্যাচ মিস করেছেন খোদ সাকিব আল হাসান।
নাসুমের একই ওভারের চতুর্থ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন বাটলার। তবে মিড অনে ইংলিশ অধিনায়কের একেবারে সহজ ক্যাচটি লুফে নিতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। স্বাগতিকরা শেষ পর্যন্ত সেই নাসুমের হাত ধরেই প্রথম সাফল্য পায় ম্যাচের দশম ওভারে গিয়ে।
ফিল সল্টকে ফিরিয়ে ভেঙেছেন জস বাটলারের সাথে ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন নাসুম। এই বাঁহাতি স্পিনার নিজের চতুর্থ ও শেষ ওভারের শেষ বলে কট বিহাইন্ড করে ফেরান সল্টকে। উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন সল্ট, যার ফলে নেন রিভিউ। তবে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। ৩৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করে ধরেন প্যাভিলিয়নের পথ।
উইকেটে এসে বেশি সময় টিকতে পারেননি ডেভিড মালান। ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে সাকিবের শিকার হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৭ বলে মাত্র ৪ রান করেন তিনি। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা বিপদে পড়া ইংলিশদের হয়ে বেন ডাকেটকে সঙ্গে নিয়ে হাল ধরেন বাটলার। তাদের ৪৭ রানের জুটি স্বস্তি দেয় সফরকারীদের। ১৬তম ওভারের শেষ বলে ১৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২০ রান করা ডাকেটকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান।
সেই শুরু ইংল্যান্ডের পতন। পরের ওভারেই প্রথম বলে বাটলারকে ফিরিয়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেন হাসান মাহমুদ। এক প্রান্ত আগলে দারুণ খেলতে থাকা বাটলার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি হাঁকিয়ে ফেরেন ৬৭ রান করে। ৪২ বলের ইনিংসটি সাজান ৪টি করে ছয় ও চারের মারে। আগের দুই ওভারে ২১ রান খরচ করা হাসান মাহমুদ ইনিংসের ১৭তম ও নিজের তৃতীয় ওভারে খরচ করেন মাত্র ১ রান। সঙ্গে বাটলারের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটে ম্যাচের চিত্রই পাল্টে যায়।
উইকেটে এসে স্যাম কারান, ক্রিস ওকসরা রান করতে পারেননি। ১৯তম ওভারে কারানের উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি মাত্র ৪ রান খরচ করেন হাসান। ইনিংসের শেষ ওভারের শুরুতেই ওকসের উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে বড় রানের হাত থেকে রক্ষা করেন তাসকিন। এই পেসারের সেই ওভার থেকে ৯ রান তুলে নিয়ে দলের রান কোনোমতে দেড়শ পার করেন ক্রিস জর্ডান ও মঈন আলি। মঈন ৭ বলে ৮ ও জর্ডান ৩ বলে ৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ে শুরুতে সবাই খরুচে ছিলেন। শেষদিকে এসে লাগাম টেনেছেন নিজেদের। এর মধ্যে ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার হাসান। সাকিব একই রান খরচ করলেও, শিকার করেন ১টি উইকেট। এর বাইরে নাসুম, মুস্তাফিজ ও তাসকিন ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। সবাই ৩০’র ওপর রান খরচ করেছেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post