স্পোর্টস ডেস্ক:: চেন্নাই টেস্টের পর এবার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি খেলতে চার্টাড ফ্লাইটে করে কানপুরে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল। বিসিসিআই কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে বাংলাদেশ দলকে কানপুরে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পর হমলা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে ভারতের ধর্মীয় সংগঠন ‘হিন্দু মহাসভা’র স্থানীয় নেতাকর্মীরা কানপুরে বাংলাদেশকে না খেলতে দেওয়ার হুমকি আগেই দিয়ে রেখে ছিলেন।
‘হিন্দু মহাসভা’র সদস্যদের অভিযোগ, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্যাতন করা হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের উপর হামলাকারী দেশের বিপক্ষে যেনো তাদের শহরে ম্যাচ না খেলে ভারত। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়ে কানপুরেই ম্যাচ আয়োজন করছে।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ দল কানপুরে পৌঁছেছে। নাজমুল হোসেন শান্তদের সফরকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে বাড়ানো হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য। শহরে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে রীতিমতো। দীর্ঘ দিন থেকে কানপুরের মানুষ এমন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখেননি।
ভারত-বাংলাদেশ দুই দলই কানপুরে পৌঁছে গেছে। শুক্রবার থেকে কানপুরের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি। বিমানবন্দর থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ক্রিকেটারদের টিম হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুই দলের ক্রিকেটারদের আবাস টিম হোটেলগুলোর আশপাশে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাদ যায়নি অনুশীলন ভেন্যু ও স্টেডিয়াম এলাকাও।
শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নিরাপত্তা বাহীনির অবস্থান দেখে ট্যাক্সি ড্রাইভার নিজ থেকেই বলছিলেন, ক্রিকেট টিমের কারণে এমন অবস্থা। বাংলাদেশের একজন সংবাদ কর্মীকে শহরে এমন নিরাপত্তা বলয় দেখা যায় না বলেও জানিয়েছেন অরপিট ত্রিবেদি নামের এই ট্যাক্সি ড্রাইভার।
শহরে ক্রিকেটারদের পৌঁছানোর দিনে ধর্মীয় সংগঠনটি কানপুর গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামের সামনে বিক্ষোভ করেছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদ করে তারা বিক্ষোভ করছিল বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ম্যাচটির নিরাপত্তায় মোতায়েন করা ইন্টেলেজিন্স ব্যুরোসহ বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য;দের। বিশেষ করে গ্রিনপার্ক স্টেডিয়াম এলাকা ও টিম হোটেলে দেওয়া হবে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। কানপুর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারিশ চান্দার জানিয়েছেন, ক্রিকেট দল থেকে পাওয়া অনুরোধের কারণে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করছি যাতে কোনও আন্দোলন গড়ে না উঠে।’
টেস্ট সিরিজের পরপরই শুরু হবে টি-২০ সিরিজ। সেই সিরিজেও আছে হুমকি। দেশটির মধ্য প্রদেশে আগামি ৬ অক্টেবার শুরু হবে টি-২০ সিরিজ। কানপুরের মতো একই অভিযোগ করে ম্যাচের দিন ‘গোয়ালিয়র বনধ’ তথা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হিন্দু মহাসভা।গোয়ালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রথম টি-২০ ম্যাচের ভেন্যু।
হিন্দু মহাসভার জাতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট জয়বীর ভরদ্বাজ গতকাল সোমবার গোয়ালিয়রে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিরোধিতা করে বলেছিলেন, তারা চান না নির্মমভাবে হিন্দু নির্যাতনকারী কোন দেশের বিরুদ্ধে এখানে ম্যাচটি হোক। যেখানে এখনও দেশটিতে হিন্দু নির্যাতন চলছে সেখানে ভারত কিভাবে তাদের বিপক্ষে খেলে? এখানে খেলা ঠিক হবে না। এই ম্যাচ আয়োজন অনুচিত। তাই তারা ম্যাচের দিন ‘গোয়ালিয়র বনধ’ তথা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
তবে গোয়ালিয়র বনধের দিনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, মেডিকেল সেরা ও জরুরি বিষয়াদি এই ধর্মঘটের আওতার বাইরে থাকবে বলেও জানিয়েছে তারা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই অবশ্য এসব আন্দোলন-হুমকিকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধা্ন্তেই আছেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০