নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের সমর্থকদের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দেওয়ায় মুগ্ধ হয়েছিল গোটা ফুটবল বিশ্ব। যে দেশকে কাতার বিশ্বকাপে সমর্থন দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল লাল-সবুজের কোটি ভক্ত, তাদেরকে স্মরণ করতে বিন্দুমাত্র ভুলেনি আর্জেন্টাইনরা।
খোদ আর্জেন্টিনার প্রধান কোচ লিওনেল স্কালোনি, সুপারস্টার লিওনেল মেসিরা এমন সমর্থনের জন্য বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া আর্জেন্টাইনরা প্রতিটা পদে পদে বাংলাদেশকে স্মরণ করে। বলা যায় বিশ্বকাপ নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনার সম্পর্কে। এমনকি পুনরায় বাংলাদেশে নিজেদের দূতাবাস পর্যন্ত খুলেছে আর্জেন্টিনা সরকার। দুই দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে চিঠি আদান-প্রদান হয়েছে। আরও অনেক কিছুই হয়েছে।
এমন সমর্থন দেখে নিজেই বাংলাদেশে আসার কথা জানিয়েছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনার ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতার অন্যতম নায়কের কলকাতা সফর করার কথা। তবে আয়োজকদের কাছে রেখেছিলেন অনুরোধ, তিনি বাংলাদেশে আসতে চান। তার সেই চাওয়া পূরণ হয়েছে।
কলকাতায় আনুষ্ঠানিক প্রোগ্রামের আগে বাংলাদেশ সফরে এসে গেছেন মার্টিনেজ। সোমবার ১১ ঘন্টার সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশ আসেন এই বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক। সোমবার ভোরে ঢাকায় পা রাখার পর হোটেলে বিশ্রাম নিয়ে তাকে নিয়ে আসা স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের ছোট্ট অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
যেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তাজা। এছাড়াও উপস্থিত আছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। সেই অনুষ্ঠান শেষে মার্টিনেজ সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে। এরপরই বিকাল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা ত্যাগ করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হন মার্টিনেজ।
দিনজুড়ে মার্টিনেজের ব্যস্তময় কর্মসূচিতে অবশ্য ছিল না সমর্থকদের নিয়ে কোনো আয়োজন। যাদের অকুন্ঠ সমর্থনেই কিনা বাংলাদেশকে চিনেছিলেন মার্টিনেজ, এসেছেন এই দেশে। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাথেও কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। যার ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা করার কোনো সুযোগ ছিল না বাংলাদেশ দলেরও।
তবে যতটূকূ সময় থেকেই, সেই আতিথেয়তায় মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন মার্টিনেজ। হৃদয়ের একটা অংশে বাংলাদেশকে রাখবেন তিনি বলে জানিয়েছেন। একইসাথে বাংলাদেশের সমর্থকদের দেওয়া বাজপাখি নামকেও স্মরণে রাখবেন চিরকাল। বিদায়বেলা সামাজিক যোগা্যোগ মাধ্যমে এক পোস্টে সেই কথা উল্লেখ করেন মার্টিনেজ।
মার্টিনেজ তার পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশে আমার সফর অতুলনীয় ছিল, যা নেক্সট ভেঞ্চারস এবং ফান্ডেড নেক্সট-এর তত্ত্বাবধানে হয়েছে। এখানকার লোকেরা, তাদের ভালবাসা, যত্ন এবং অতুলনীয় আতিথেয়তায় সত্যিই আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আমি অধীর আগ্রহে এই সুন্দর দেশে অদূর ভবিষ্যতে আবার ফিরে আসার প্রত্যাশা করছি।’
‘আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুলিশ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং আরও অগণিত ব্যক্তিকে, যাদের নাম হয়তো আমি জানি না, কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা কম তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না। আপনারা সবাই এই বিশেষ বন্ধন তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন, যা আমি এখন বাংলাদেশের সাথে শেয়ার করছি।’
‘তাই, আমার পরবর্তী সফর পর্যন্ত, আমি আপনাদেরকে বিদায় জানাচ্ছি। আমার হৃদয়ের একটি অংশ এখানে রেখে যাচ্ছি। আমি চিরকাল বাংলাদেশের বাজপাখি হয়ে থাকব।’
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post