নিজস্ব প্রতিবেদক:: বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এমন শুরু আগে আর কখনো পায়নি। উদ্বোধনী জুটিতে ইতিহাস গড়ে সর্বোচ্চ রান তুলেছে বাংলাদেশ। সোবহানা মুস্তারী ও দিলারা আক্তারের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ তুলে নেয় ১০৩ রানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ নারী দলের উদ্বােধনী জুটিতে যা সবোচ্চ রান। এমন দুর্দান্ত শুরুর ম্যাচও বাংলাদেশকে হারতে হয়েছে।
বাংলাদেশের এমন রেকর্ড গড়া জুটির দিনে ‘রেকর্ড’ গড়েছে আয়ারল্যান্ডও। টাইগ্রেসদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তুলেছে দলটি। টি-২০ ফরম্যাটে ৫ উইকেটে ১৬৯ আইরিশ মেয়েদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ বাংলাদেশের বিপক্ষে। বোলারদের দারুণ নৈপূণ্যে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত আইরিশরা ১২ রানে জিতেছে।
ফরম্যাট বদলানোর সঙ্গে সঙ্গেই বদলে গেছে বাংলাদেশের চেহারাও। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে পাত্তা না দেওয়া বাংলাদেশ টি-২০ সিরিজ শুরু করলো হার দিয়ে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে আয়ারল্যান্ড নারী দল ভালো খেলে থাকে। সেই ভালো ধারাবাহিকতা বজায় রাখলো দলটি। ওয়ানডে ফরম্যাটে বিধ্বস্ত হওয়া অতিথিরা টি-২০ ফরম্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো।
স্বাগতিক টাইগ্রেসদের লক্ষ্য ছিলো ১৭০ রান। ১২তম ওভারে বিনা উইকেটে বাংলাদেশ তুলে নেয় ১০২ রান। ১০৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে গতি হারায় টাইগ্রেসরা। সফরকারী আয়রল্যান্ডের কাছে ১২ রানে হেরে টি-২০ সিরিজ শুরু করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামা আয়ারল্যান্ড দুই হাফ সেঞ্চুরিতে ১৬৯ রান তুলে মাত্র ৫ উইকেট হারিয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ নারী দলকে থেমে যেতে হয়েছে সাত উইকেটে ১৫৭ রানে।
আয়ারল্যান্ড নারী দল টস জিতে ব্যাটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘রেকর্ড’ গড়ে। আইরিশ মেয়েরা বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তুলে। ৫ উইকেটে ১৬৯ রান আয়ারল্যান্ড তুলে থামে সফরকারীরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে আইরিশ মেয়েরা এর আগে আর কখনো এতো রান তুলতে পারেনি।
ইনিংস উদ্বোধনে নামা অধিনায়ক লুইস ও চারে নামা ডি পলের ব্যাটে চড়েই বড় পূঁজি পায় অতিথিরা। তৃতীয় উইকেটে দু’জনে মিলে গড়েন ১০৭ রানের দারুণ এক জুটি। টাইগ্রেস বোলাররা হতাশ করেন। আইরিশদের এই জুটি ভাঙতে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাদের। ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৫৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় সফরকারী দলটি। অধিনায়ক লুইসকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন ফারিহা। ৪২ বলে ৬২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। সাত চার আর দুই ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংসটি।
লুইস সাজঘরে ফিরলেও ডি পল ব্যাট হাতে অবিল থাকেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৭৯ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। ৪৫ বলে দশ চার ও দুই ছক্কার মার ছিলো তার ইনিংসে। এছাড়াও ১০ রান করেন ওপেনার হান্টার। ১১ রান আসে ওরলা প্রেন্ডারগাস্টের ব্যাট থেকে। এক অঙ্কের কোটা পেরুতে পারেননি অন্য কেউ।
বাংলাদেশের হয়ে জাহানারা, ফারিহা, জান্নাতুল ও নাহিদা একটি করে উইকেট লাভ করেন।
সর্বোচ্চ রান তাড়ায় ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশও শুরুটা দারুণ করেন। দুই ওপেনার দিলারা আক্তার ও সোবহানা মুস্তারী ১০৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। ইনিংয়সের ১২তম ওভারের শেষ বলে সুবহানা মোস্তারী সাজঘরে ফিরলে ভেঙে যায় সেই জুটি। তিন চার ও দুই ছক্কায় ৩৫ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার বিদায়ের পর দ্রতুই দ্বিতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ১৪তম ও্ভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১০৯ রানের মাথায় প্যাভেলিয়নে ফেরেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। ৫ বলে ৪ রান করেন তিনি।
অধিনায়কের বিদায়ের পরই ফিরেন দিলারা আক্তার। এই ওপেনার মাত্র ১ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন। দু’টি করে চার ও ছক্কায় ৪১ বলে ৪৯ রান করে তৃতীয় উইকেটে তিনি বিদায় হলেই ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস। তিন চারে ১৪ বলে ১৯ রান করেন তাজ নাহার। ১৩ বলে ২৩ রানে শারমিন আক্তার অপরাজিত থাকলেও বাংলাদেশের হার এড়াতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত সাত উইকেটে ১৫৭ রানে থামে টাইগ্রেসরা।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে ওরলা প্রেন্ডারগাস্ট ও আর্লিন কেলি ৩টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০