নিজস্ব প্রতিবেদক:: জাতীয় ক্রিকেট লিগে দুর্দান্ত মৌসুম কাটাচ্ছে সিলেট বিভাগীয় দল। খুলনার সাথে চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচ ;’ড্র’ করে সিলেট এখন টেবিল টপার দল। চার ম্যাচ খেলা সিলেট জিতেছে দুই ম্যাচ, ‘ড্র’ করেছে বাকী দুই ম্যাচ। ২০ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে অবস্থান করছে সিলেট বিভাগীয় দল।
খুলনাকে ফলোঅনে ব্যাট করতে পাঠিয়ে সিলেট অলআউট করতে পারেনি। ফলোঅনে পড়া খুলনা বিভাগীয দল তিন উইকেটে ২৯৬ রান তোলার পর দুই অধিনায়ক ‘ড্র’তে ম্যাচ শেষ করেন। সিলেটের করা ৪৯৬ রানের জবাবে খুলনা নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রানে অলআউট হয়েছিলো। এরপর ফলোঅনে পড়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দলটি ৭৫.৫ ওভারে তিন উইকেটে ২৯৬ রান তুলে ম্যাচ ‘ড্র’ করে।
হার ঠেকাতে খুলনার হয়ে দারুণ ব্যাট করেন মোহাম্দ মিঠুন, এনামুল হক বিজয়, ইমরুল কায়েস ও নুরুল হাসান সোহান। মিঠুন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে থাকেন অপরাজিত। জয়ের জন্য যথেষ্ট রান ও সময় হাতে থাকলেও সিলেটের বোলাররা প্রথম ইনিংসের মতো খুলনাকে দ্বিতীয় ইনিংসে খুব একটা চাপে ফেলতে পারেননি। দুই চার ও তিন ছক্কায় ১০১ বলে ৫৪ রান করেন খুলনার ওপেনার বিজয়। আরেক ওপেনার অমিতদ মজুমদার করেন ৫ রান। ৭১ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলে রানআউট হন ইমরুল কায়েস। সাতচার ও দুই ছক্কায় ১৬২ বলে সাজান নিজের ইনিংসটি।
চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ে মিঠুন ও সোহান অপরাজিত থাকেন। দুর্দান্ত শতক হাঁকানো মিঠুন ১০২ রানের ইনিংস খেলেন। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের ইনিংস সাজাতে তিনি সাতটি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ছয় চার ও এক ছক্কায় ৬০ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন নুরুল হাসান সোহান।
সিলেটের হয়ে তোফায়েল ও নাবিল একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে খুলনাকে মাত্র ২৭৩ রানে অলআউট করে দিয়ে ২২৩ রানের বড় লিড পায় সিলেট। কক্সাবাজারেে একাডেমি মাঠে সিলেটের করা ৪৯৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নামা খুলনা পেসার খালেদ, স্পিনার নাবিল ও নাঈমদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে অল্পতেই গুটিয়ে গেছে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে সিলেটের রান পাহাড়ে চাপা পড়েছে দলটি। এনামুল হক বিজয়ে মাত্র ১২ রানের জন্য মিস করেছেন সেঞ্চুরি। দলের পক্ষে ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৮ রান করেছেন তিনি। ১৭১ বলের ইনিংসে সাত চার ও পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়েছেন এই ওপেনার।
সিলেটের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো খুলনার হয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সাতে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব। ১০৮ বলে ৫৩ রান করেছেন তিনি। তার ইনিংসে চার চার ও এক ছক্কার মার। এছাড়াও ৪৭ রান করেছেন মিঠুন। ২৬ রান করেছেন জিয়াউর রহমান। ২৪ রান করেছেন অধিনায়ক সোহান।
সিলেটের হয়ে খালেদ আহমদ ও নাবিল সামাদ ৩টি করে, নাঈম ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে সিলেট। অমিত হাসানের ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ আর গালিবের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ গড়েছে সিলেট বিভাগীয় দল।ট। কক্সাজারের একাডেমিট মাঠে রীতিমতো রান উৎসব করছে সিলেট বিভাগীয় দল। খুলনার বোলারদের পিটিয়ে সিলেটের একজন সেঞ্চুরি, একজন ডাবল সেঞ্চুরিতো করেছেন, আরেকজন এক রানের জন্য মিস করেছেন সেঞ্চুরি। তাতে্ ৭ উইকেটে ৪৯৬ রান তুলে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেছে সিলেট।
আগে ব্যাট করতে নামা সিলেট শুরু করে উইকেট হারিয়ে। ওপেনার তুষার মাত্র ৪ রান করেই ফিরেন প্যাভেলিয়নে। তার বিদায়ে তিনে নামা দিশানও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২১ রানে, দলীয় ২৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ইনিংসের ষষ্ট ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে সিলেট বিভাগীয় দল।
দ্রুত দুই উইকেট হারানো সিলেটের হয়ে এরপর জুটি গড়েন ‘ডাবল সেঞ্চুরিয়ান’ অমিত হাসান ও এক রানেরজন্য সেঞ্চুরি মিস করা পিনাক ঘোষ। ২১৮ বলে ৯৯ রান করা পিনাকের বিদায়ে ভাঙে তাদের সেই জুটি। সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপে পুড়া পিনাক বার চার ও এক ছক্কায় সাজিয়ে ছিলেন নিজের ইনিংসটি।
পিনাকের বিদায়ের পর গালিবকে নিয়ে জুটি গড়েন অমিত। তরুণ ব্যাটার আসাদুল্লাহ আল গালিবও সেঞ্চুরি হাঁকান। প্রথম শ্রেণীর ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংস তিনি সাজিয়েছেন ২৭২ বলে সাত চার ও তিন ছক্কায়। খেলেছেন ১১৫ রানের ঝলমলে এক ইনিংস। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসা তোফায়েল ব্যক্তিগত সাত রানে ফিরে গেলে বাংলাদেশ হারায় চতুর্থ উইকেট।
তবে অবিচল থাকেন অমিত হাসান। ডাবলের পেছনে ছুটেন তিনি। খেলেছেন ২১৩ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। ৪৫৫ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৮টি চার ও একটি ছক্কায়। রাহাতুল ফেরদৌস জাবেদ ১৫ রানে ফিরে যাওয়ার পর ইনিংস ডিক্লেয়ার করে সিলেট। তার আগে ১৬৩.৪ ওভারে সাত উইকেটে ৪৯৬ রান তুলে।
খুলনার হয়ে শেখ মেহদী চারটি ও জিয়াউ রহমান তিনটি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০