নিজস্ব প্রতিবেদক:: জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে চট্টগ্রাম বিভাগীয দলের বিপক্ষে জয়ের পথে এগুচ্ছে সিলেট বিভাগীয় দল। বল হাতে দুর্দান্ত হয়ে উঠা রাজা, নাসুম-নাঈমদের দিনে চট্টগ্রাম নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৭৩ রানে। তাতে সহজ ২২০ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েছে।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা সিলেট দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে দুই উইকেটে ১৩০ রান তুলে। জয়ের জন্য সিলেটের হাতে আছে আট উইকেট, রয়েছে পুরো দুই দিন। প্রয়োজন মাত্র ৯০ রানের। গালিব, তোফায়েল, অমিত হাসানের ব্যাটে সিলেট প্রথম জয়ের অপেক্ষায় আছে।
চট্টগ্রামের দেওয়া লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা সিলেট দারুণ শুরু পায় দুই ওপেনার জাকির হাসান ও তৌফিক খান তুষারের ব্যাটে। দু’জনের উদ্বোধনী জুটিতেই স্বাগতিকরা তুলে নেয় ৮৪ রান। ইনিংসের ১২তম ওভারের চতুর্থ বলে অধিনায়ক জাকিরের বিদায়ে ভাঙে তাদের জুটি। তবে আরেক ওপেনার তুষার করেন ফিফটি। পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৩৮ বলে ওয়ানডে মেজাজে ৫১ রান করে তিনি ফিরেন প্যাভেলিয়নে। সিলেটের রান তখন ৯৯।
তুতীয় উইকেটে জুটি গড়েছেন পিনাক ঘোষ ও অমিত হাসান। ১৪ রানে পিনাক ও ২৩ রানে অমিত অপরাজিত আছেন। সিলেট দিন শেষ করেছে ২২ ওভারে দুই উইকেটে ১৩০ রানে। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জয়ের জন্য কাল আবারো ব্যাট করতে নামবেন।
চট্টগ্রামের হয়ে আশরাফুল হাসান দু’টি উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে চট্টগ্রাম নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে লিড নিয়ে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ১৭৩ রানেই গুটিয়ে যায়। দলের পক্ষে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪২ রান করেন সাজ্জাদুল রিপন। ৬৮ বলের ইনিংসে পাঁচ চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেছেন ওপেনার পারভেজ ইমন। পাঁচ চারে ৬৫ বলে নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি।
সিলেটের তিন বোলার নাসুম, রাজা ও নাঈমদের বোলিং তোপে পড়ে চট্টগ্রামের কোনো ব্যাটারই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন আশরাফুল হাসান। ১৫ রান করেছেন সাদ্দাম হোসাইন।
সিলেটের হয়ে নাঈম, নাসুম ও রাজা ৩টি করে, তোফায়েল ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে নিজেদের ঘরের মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগকে তাদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন সিলেটের বোলাররা। সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম দুইয়ে আগে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল ৪৫.২ ওভারে ১৯৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। সিলেটের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চট্টলার ইয়াসির আলি রাব্বি ছাড়া কোনো ব্যাটারই ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেছেন ইয়াসির আলী রাব্বি। ৯১ বলের ইনিংসে তিনি চার হাঁকিয়েছেন নয়টি, ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
রাজা, তোফায়েল-রাহীদের বোলিং তোপে নিয়মিত বিরিততেই উইকেট হারাতে থাকে চট্টগ্রাম। ৫৭ বলে ৩৩ রান করেন সাজ্জাদুল হক ইমন। ২৪ রান করেন শামীম পাটোয়ারী। ২০ বলের ইনিংসে তিন চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। এক অঙ্কের কোটা পেরুতে পারেননি চট্টগ্রামের অন্য কোনো ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ১৯৮ রানেই থামতে হয় তাদেরকে।
সিলেটের হয়ে তোফায়েল ও রাজা ৩টি করে, আবু জায়েদ রাহী ২টি, নাসুম ও নাঈম ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
জবাবে ব্যাট করতে নামা সিলেটের শুরুটাও ভাল হয়নি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৮ রানের মাথায় ফিরে যান ওপেনার তুষার। এই ওপেনার করেন ৭ রান। সিলেটের অধিনায়ক জাকির হাসানও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৭ বলে ১৩ রানেই ফিরেন সাজঘরে। তার বিদায়ে দলীয় ২২ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তিনে নামা পিনাক ঘোষও ফিরেন দ্রুত। জাকিরের বিদায়ের পর ইনিংসের ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৬৭ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৪৩ বলে করেন ২০ রান।
দ্রুত তিন উইকেট হারানো সিলেট চতুর্থ উইকেটও হারায় দ্রুত। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেটে ফিরে যান উইকেটরক্ষক অমিত হাসান। ৮২ বলে করেন ২৭ রান। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসা মাইশুকুর রহমান রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেন প্যাভেলিয়নে। জাকির হাসানের দল পঞ্চম উইকেট হারায় দলীয় ৮৫ রানে ইনিংসের ২৯তম ওভারের পঞ্চম বলে। গালিব করেন ৩৪ রান। নাসুম করেন ২১। চট্টগ্রামের বোলিং তোপে সিলেট মাত্র ১৫২ রানেই গুটিয়ে যায়।
চট্টগ্রামের হয়ে ইরফান ৫টি ও আশরাফুল হাসান ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০