স্পোর্টস ডেস্ক:: দীর্ঘ তিন দশক পর ঘরের মাঠে আইসিসির বৈশ্বিক আসরে খেলতে নেমে শুরুটা ভাল করতে পারল না পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে শুরু হয়েছে রিজওয়ান-বাবরদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লড়াই। বাবর আজম-খুশদিল শাহর হাফ সেঞ্চুরির পরও পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে ৬০ রানের ব্যবধানে।
করাচিতে উদ্বোধনী ম্যাচে উইল ইয়ং ও টম লাথামের সেঞ্চুরিতে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড ৩২০ রান তুলে। জবাবে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান অলআউট হয়েছে ২৬০ রানে।
৩২১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান শুরুই করে বাজে ভাবে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ৮ রানের মাথায় ফিরে যান ওপেনার সাউদ শাকিল। ১৯ বলে মাত্র ৬ রান করেন। শুরুর এই ডট খেলা ম্যাচের শেষ অব্দী বজায় রাখেন তার সতীর্থরা। বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমেও একের পর এক ডট খেলতে থাকেন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। তাতেই পাকিস্তানের হার অনেটা নিশ্চিত হয়ে যায়।
সাউদ শাকিলের বিদায়ের পর তিনে নামা অধিনায়ক রিজওয়ান দলকে আরো বড় বিপদে ফেলে দেন্ ১৪ বলে মাত্র ৩ রান করে দলীয় ২২ রানে তিনিও ফিরেন প্যাভেলিয়নে। ফখর জামানকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন বাবর আজম। দলীয় ৬৯ রানে ইনিংসের ২১তম ওভারের পঞ্চম বলে ২৪ রান করা ফখরের বিদায়ের পর আবারো চাপে পড়ে পাকিস্তান। এক প্রান্ত আগলে রাখা বাবর আজম চতুর্থ উইকেটে সালমানকে নিয়ে ৫৮ রানের জুটি গড়ে আবারো ঢাল হয়ে দাঁড়ান। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১২৭ রানে সালমানের বিদায়ে ভাঙে সেই জুটি। ২৮ বলে ৪২ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর এক রান যোগ করতেই প্যাভেলিয়নে ফিরেন তাইব তাহির। চতুর্থ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
৩৪তম ওভারের শেষ বলে বাবর আজমের বিদায়ে পাকিস্তানের হার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। দলীয় ১৫৩ রানে পঞ্চম উইকেটে বাবর ফিরেন ৬৪ রান করে। ধীরগতির ইনিংসে ৯০ বল খেলেন তিনি। ছয় চারের সঙ্গে হাঁকান একটি ছক্কাও। তার বিদায়ের পর উইকেটে এসে খুশদিল শাহ ঝড় তুলেন। তবে সেই ঝড় বেশিক্ষণ টেকেনি। ৪৪তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২২৯ রানের মাথায় অষ্টম উইকেটে তিনিও ফিরেন প্যাভেলিয়নে। দশ চার ও এক ছক্কায় ৪৯ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর পাকিস্তান ৪৭.২ ওভারে ২৬০ রানেই গুটিয়ে যায়।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে মিচেল স্যান্টনার ও র্রুক তিনটি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ড শুরু থেকেই ছন্দে ছিলো। দলীয় ৩৯ রানে, ইনিংসের অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলে ওপেনার ডেভন কনওয়ে ব্যক্তিগত ১০ রানে বিদায় হলে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে দলটির। দ্রুতই হারিয়ে ফেলে দ্বিতীয় উইকেটও। নবম ওভারের প্রথম বলে তিনে নামা কেন উইলিয়ামসন ফিরে যান এক রান তুলতেই। ডেরিল মিচেলকে নিয়ে উইল ইয়ং ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন। ইনিংসের ২৭৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৭৩ রানে মিচেল ফিরে গেলে ভেঙে যায় তাদের জুটি। ২৪ বলে ১০ রান করেন তিনি।
তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা নিউজিল্যান্ড চতুর্থ উইকেটে ঘুরে দাঁড়ায় উইল ইয়ং ও টম লাথামের ব্যাটে। দুর্দান্ত ব্যাট করা এই জুটি তুলে নেয় ১১৮ রানে। তাতেই বড় রানের পূঁজি পেয়ে ব্ল্যাকক্যাপসরা। ইনিংসের ৩৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৯১ রানের মাথায় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফিরেন ইয়ং। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেঞ্চুরি আসে এই ওপেনারের.ব্যাট থেকে। ১১৩ বলে ১০৭ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি ১২ চার ও ১ ছক্কায়।
সেঞ্চুরিয়ান ইয়ংয়ের বিদায়ের পর উইকেটে আসা গ্রীণ ফিলিস ঝড় তুলেন। একের পর এক বাউন্ডারিতে পাকিস্তানী বোলারদের তুলোধুনো করে ছাড়েন তিনি। চার ছক্কা ও তিন চারে মাত্র ৩৯ বলে ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন ফিরেন দলীয় ৩১৯ রানে ইনিংসের দুই বল আগে। পঞ্চম উইকেটে সেঞ্চুরিয়ান লাথামকে নিয়ে গড়েন ১২৫ রানের জুটি। ১০৪ বলে ১১৮ রানের দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন লাথাম। দশ চার ও তিন ছক্কায় সাজান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারটি। পাঁচ উইকেটে ৩২০ রানে থামে নিউজিল্যান্ড।
পাকিস্তানের হয়ে নাসিম শাহ ও হারিস রউফ দু’টি করে উইকেট লাভ করেন।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/ডেস্ক/০০