নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চলতি আসরে প্রথম জয়ের দেখা পেল ফরচুন বরিশাল। রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। আর যেখানে অলরাউন্ডিং পারফম্যান্সে নায়কের ভূমিকায় মেহেদী হাসান মিরাজ। বল হাতে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে টপ অর্ডারে নেমে ৪৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছেন তিনি।
এই জয়ে পয়েন্টের খাতা খুলো বরিশাল। অপরদিকে প্রথম ম্যাচে জয় দিয়ে আসর শুরু করলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে হোঁচট খেল রংপুর। পেল হারের তেতো স্বাদ।
রংপুরের দেওয়া ১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই চতুরঙ্গা ডি সিলভার উইকেট হারিয়ে বসে বরিশাল। এরপর চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। কিন্তু তার এলবিডব্লিউর উইকেট আছে বিতর্ক। দলীয় ১৮ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে খানিকটা দিশেহারা হয়ে পড়ে বরিশাল।
তবে টপ অর্ডারে নামা মিরাজ ও আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরান ৮৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে কক্ষপথে ফেরান। সেই জুটিই জয়ের পথ সুগম করে দেয় বরিশালের। ২৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪৩ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে মিরাজ ফিরলে ভাঙে জুটিটি। দলীয় ১৪ রানের মাথায় ফিরেন ইব্রাহিমও। তবে এর আগে হাঁকান ফিফটি। ৪১ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৫২ রানের সেই ইনিংসটি বেশ কার্যকরী ছিল।
পঞ্চম উইকেটে দুই বিদেশী ইফতেখার আহমেদ ও করিম জানাতের ৩৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ভর করে চার বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল। ১৮ বলে এক ছক্কায় ২৫ রান করে ইফতেখার এবং ১৪ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন করিম।
রংপুরের হয়ে সিকান্দার রাজা দুই ওভার বল করে ১৪ রানে ২ উইকেট শিকার করেছেন। রাকিবুল হাসান ও রবিউল হক ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানের পুঁজি পায় রংপুর রাইডার্স। সাকিব আল হাসানের শিকার হয়ে ইনিংসের একেবারে প্রথম বলে আউট হয়ে ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে ফিরেন নাইম শেখ।
এদিন টপ অর্ডারে ব্যাট করতে নামেন মেহেদী হাসান। তবে দলের ‘বাজির ঘোড়া’ হতে পারেননি। এবাদতের বলে বোল্ডআউট হয়ে ৭ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৬ রানে ফিরে উল্টো চাপ বাড়িয়ে দেন। চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ইনফর্ম সিকান্দার রাজা। ৭ বলে মাত্র ২ রান করা জিম্বাবুয়ের এই তারকাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান চতুরঙ্গা ডি সিলভা। আর পাওয়ার প্লে’র মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর।
সেই চতুরঙ্গাই দলীয় ৭৬ রানে ফেরান রনিকে। প্রথম ম্যাচের পর এই ম্যাচেও ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। দল উইকেট হারালেও, তার ব্যাটে অনেকটা স্বস্তি থাকে রাইডার্স শিবিরে। তবে এই ওপেনারের বিদায় ফের দুঃশ্চিন্তায় ফেলে দেয় তাদেরকে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২৮ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৪০ রানের ইনিংস খেলেন রনি।
রনির বিদায়ের পর উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় মেহেদী হাসান মিরাজের শিকারে পরিণত হন। এর আগে ১২ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১২ রান করে যান।দলীয় একশ পূরণের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে চরম চাপে পড়ে রংপুর। পরবর্তীতে সুবিধা করতে পারেননি বেনি হাওয়েল ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
তবে সেখান থেকে শোয়েব মালিকের ব্যাটে চড়ে ভালো এক সংগ্রহ পায় দলটি। এক প্রান্ত আগলে রাখা মালিক খেলেন ৩৬ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন রবিউল হক। তিনি ১৫ বলে ১ ছক্কায় ১৮ রান করেন। তাদের দুজনের অষ্টম উইকেটে ২৬ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিই রংপুরকে দেড়শ পার করা লড়াকু সংগ্রহ এনে দেয়।
বরিশালের হয়ে চতুরঙ্গা ডি সিলভা ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি করে উইকেট লাভ করেন। সাকিব, এবাদত ও করিম জানাত শিকার করেন ১টি করে উইকেট। এর মধ্যে সাকিব ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচ করেন। মিরাজ ২১ রান খরচ করেন সমান ওভার বল করে।
এসএনপিস্পোর্টসটোয়েন্টিফোরডটকম/নিপ্র/সা
Discussion about this post